কিয়েভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৯ জন নিহত ও একটি শিশু হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার (৮ জুলাই) ওয়ারশ সফরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। এ সময় তিনি পোল্যান্ডের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বিশ্ব নেতারা যখন মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে শুরু হতে যাওয়া ন্যাটো সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন জেলেনস্কি কিয়েভের মিত্রদের প্রতি সোমবারের হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান। ওয়ারশতে সংবাদ সম্মেলনে রুশ হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিটের নীরবতা পালন দিয়ে শুরু হয়।
জেলেনস্কি বলেন, আমি আমাদের অংশীদারদের কাছ থেকে আরও দৃঢ় প্রতিক্রিয়া চাই। রাশিয়া আমাদের জনগণ, আমাদের ভূমি, আমাদের শিশুদের ওপর আবারও যে আঘাত করেছে সেটির আরও দৃঢ় জবাব চাই। আমরা নিশ্চিতভাবে প্রতিশোধ নেব, রাশিয়াকে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। তবে আমাদের অংশীদাররা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে, সেটাই প্রশ্ন।
তিনি আরও বলেন, কিয়েভ চায় তাদের মিত্রদের সরবরাহকৃত অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার যে স্থান থেকে আক্রমণ চালাচ্ছে সেগুলোতে আঘাত হানতে।
জেলেনস্কি বলেন, আমরা আমাদের অংশীদারদের কাছ থেকে এমন সিদ্ধান্ত পেতে সত্যিই আগ্রহী। নাহলে তারা হয়ত আবারও এমন আক্রমণ দেখতে চান।
জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেন তাদের পশ্চিমা অংশীদারদের কাছ থেকে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও জ্বালানি খাতের সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছে। রাশিয়ার আক্রমণের পরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা করছে কিয়েভ।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকে রাশিয়া লক্ষ্যবস্তু করার পরিপ্রেক্ষিতে পোল্যান্ড শীতকালে ইউক্রেনের জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে আলোচনা করছে।
তিনি আরও বলেছেন, ন্যাটো অঞ্চলে প্রবেশের আগেই ইউক্রেনের মাটিতে থাকা অবস্থায় রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করার বিষয়ে পোল্যান্ড আলোচনা করতে প্রস্তুত।
টাস্ক বলেন, আমাদের এখানে ন্যাটোর স্পষ্ট সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ এমন পদক্ষেপের জন্য ন্যাটোর যৌথ দায়িত্ব প্রয়োজন। আমরা এটির জন্য উন্মুক্ত এবং যৌক্তিকভাবে এটি একটি কার্যকর পদক্ষেপ হবে।
পোল্যান্ডের সঙ্গে এই চুক্তিটি কিয়েভের ২১তম নিরাপত্তা চুক্তি। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির মতো দেশগুলোর সঙ্গে এমন চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
এই চুক্তিগুলো ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির মতো নয়। তবে এটি ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অন্যান্য সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। যাতে করে কিয়েভের নিরাপত্তা বজায় এবং ভবিষ্যতে যে কোনও আগ্রাসন রোধ করা যায়।