রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে গত এক বছর খুব ভালো যায়নি ইউক্রেনের। কিন্তু আগস্টের শুরুতে রুশ ভূখণ্ডে আকস্মিক অভিযানে ইউক্রেনীয় সেনাদের সাফল্যে মনোবল বাড়তে শুরু করেছে ইউক্রেনীয়দের। ৬ আগস্ট রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্কে অভিযানে প্রায় ২০-৩০ কিলোমিটার গভীরে প্রবেশ করেছে তারা। এখন পর্যন্ত রাশিয়া তাদের বিতাড়িত করতে পারেনি। বরং ইউক্রেনীয়রা আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
কিয়েভের বাসিন্দা ওলহা পাভলোভস্কা প্রতি সপ্তাহে রণক্ষেত্রের খবর প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। কিন্তু এসব খবরের বেশিরভাগ ছিল হতাশাজনক। কিন্তু চলতি মাসে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয়দের অভিযান তার কাছে বিরল আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে।
কিয়েভের একটি গির্জার বাইরে দাঁড়িয়ে পাভলোভস্কা বলেন, সমাজের নৈতিক মনোবল ধরে রাখার জন্য এটি ছিল খুব সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ইউক্রেনীয় নেতারা কুরস্কে অভিযানকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রুখ ভূখণ্ডে সবচেয়ে বড় আক্রমণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। তারা বলছেন, এখনও যে ইউক্রেনীয় সেনারা অবাক করার মতো আক্রমণাত্মক অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা রয়েছে।
কিয়েভের সেনারা রাশিয়ার বিশাল ভূখণ্ড ও বেশ কয়েকজন সেনাকে বন্দি করেছে। রাশিয়ার কাছে আটক থাকা সেনাদের মুক্ত করতে বন্দিবিনিময়ে তাদের কাজে লাগানো হবে। ২০২২ সালের শেষের দিকের পর ইউক্রেনীয়রা রুশবাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করতে না পারায় মনোবল বৃদ্ধির জন্য এমন একটা পদক্ষেপ জরুরি ছিল।
গত বছর ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত পাল্টা অভিযানে রুশ সেনাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে কিয়েভ। মস্কোর সেনাদের এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ঠেকাতে ক্ষয় হয়েছে ইউক্রেনের সরঞ্জাম।
এই ব্যর্থতার কারণে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার বিষয়ে ইউক্রেনীয়দের আশাবাদে ভাটা পড়ে। গত মাসে প্রকাশিত এক জরিপ অনুসারে, ৩২ শাতংশ মানুষ রাশিয়ার দখল করা ভূখণ্ডের অধিকার ছেড়ে যুদ্ধ অবসানে রাজি ছিলেন। এক বছর আগের তুলনায় এমন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে দশ শতাংশ।
কিন্তু সম্প্রতি মনোভাব পাল্টে গেছে। অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা অনেক সেনা জানিয়েছেন, তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই কতে আগ্রহী।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা রোমান কস্টেঙ্কো বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি জয় আমাদের প্রয়োজন ছিল। অনেক দিক থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য–আন্তর্জাতিকভাবে ও আমাদের নিজেদের জন্য।
যদিও তিনি স্বীকার করেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা প্রতিরোধের মুখে পড়ছে এবং ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।