দখলদার রুশবাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণে দক্ষিণাঞ্চলীয় রণাঙ্গনে একটু একটু করে এগোচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। সম্প্রতি তারা রাশিয়ার দখলে থাকা একটি গ্রাম পুনরুদ্ধার এবং ডিনিপ্রো নদীর দক্ষিণ তীরে অভিযান চালিয়ে এক রুশ কর্মকর্তাকে ছিনিয়ে এনেছে। ধীর গতির পাল্টা আক্রমণে এই সাফল্য নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ খবর জানিয়েছে।
রুশপন্থি কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনীয় সেনারা জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলের উরোজাইন গ্রামের অন্তত একাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কিয়েভ এই অগ্রগতির কথা স্বীকার করেনি। কিন্তু রবিবার তারা বলেছে, গ্রামটি পুনর্দখলে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টা বিফলে গেছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসনে ইউক্রেনের স্পেশাল ফোর্সের একটি দল ডিনিপ্রো নদী পার হয়ে একটি সফল অভিযান পরিচালনা করেছে। দাবি করা হয়েছে, তারা রাশিয়ার একজন ব্যাটালিয়ন কমান্ডারকে ছিনিয়ে এনেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নদী পার হয়ে অভিযান জোরদার করেছে ইউক্রেনীয় সেনারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, রুশ বাহিনীর প্রতিরক্ষা আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে এসব অভিযান চালানো হচ্ছে।
পশ্চিমাদের দেওয়া অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পাওয়া সেনাদের নিয়ে জুন মাসে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেন। কিন্তু এই অভিযানের অগ্রগতি ধীর গতির। এখন পর্যন্ত তারা বড় ধরনের কোনও সাফল্য অর্জন করতে পারেনি।
ডনেস্ক অঞ্চলের রাশিয়ার ন্যাশনাল গার্ডের ডেপুটি কমান্ডার আলেক্সান্ডার খোদাকভস্কি বলেছেন, ইউক্রেন উরোজাইন গ্রামের একাংশ দখল করতে পেরেছে। কারণ রাশিয়া রিজার্ভ সেনাদের নিয়ে প্রতিরক্ষা রেখা শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছে। কয়েক মাস ধরে থাকা সেনারাই গ্রামটি রক্ষায় লড়াই করেছে।
তিনি বলেছেন, রাশিয়ার মূল প্রতিরক্ষা রেখা থেকে কয়েক মাইল দূরে থাকা ইউক্রেনের আক্রমণ গতি পাচ্ছে। গ্রামগুলো ধরে রাখতে রাশিয়াকে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
জাপোরিজ্জিয়া অঞ্চলের এক রুশপন্থি কর্মকর্তা ভ্লাদিমির রগোভ বলেছেন, উরোজাইনের আশেপাশের পরিস্থিতি কঠিন এবং উদ্বেগজনক। দুই সপ্তাহের তীব্র লড়াই শেষে শত্রুরা গ্রামটির উত্তরাংশ দখল করতে পেরেছে।
ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান্না মালিয়ার সোমবার বলেছিলেন, পূর্ব ও দক্ষিণের বিভিন্ন দিকে ইউক্রেন সাফল্য পাচ্ছে। উরোজাইনে বড় লড়াই শেষে নির্দিষ্ট সাফল্য পেয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলের রণাঙ্গনেও অগ্রসর হচ্ছে ইউক্রেন। হান্না মালিয়ার বলেছেন, গত কয়েক মাসে এই রণাঙ্গনে ১৫ বর্গ মাইল এলাকা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলে ইউক্রেনীয়দের রাশিয়ার দৃঢ় প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে।