ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ না করার ঘোষণা দিয়েছে পোল্যান্ড। ইউক্রেনীয় খাদ্যশস্য আমদানি না করা নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যাথিউস মোরাউইকি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার রাতে বেসরকারি পোলস্যাট নিউজ টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোরাউইকি বলেছেন, আমরা নিজেদেরকে আধুনিক অস্ত্র দিয়ে সুসজ্জিত করার চেষ্টা করছি।
পোল্যান্ড ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে সোভিয়েত যুগের ৩২০টি ট্যাংক ও ১৪ মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। এখন আর দেওয়ার মতো তেমন কোনও অস্ত্র নেই।
পোলিশ প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য দুই প্রতিবেশী দেশের তীব্র উত্তেজনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে বিবিসি।
পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়া ইউক্রেনীয় শস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর পর মঙ্গলবার জাতিসংঘে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মন্তব্যের জন্য ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ওয়ারশ।
জেলেনস্কি বলেছিলেন, যেভাবে ইউরোপে ইউক্রেনের কিছু বন্ধু দেশ রাজনৈতিক খেলায় শস্য থেকে উত্তেজনা তৈরি করে সংহতি প্রদর্শন করছে। ওয়ারশ তার মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, জেলেনস্কির মন্তব্য পোল্যান্ডকে নিয়ে অযৌক্তিক নিন্দা। যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেনকে সমর্থন করে আসছে পোল্যান্ড।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বছরের শুরুতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউক্রেনের শস্য আমদানির নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষের পরও পোল্যান্ডসহ তিনটি দেশ আমদানি বন্ধ রাখে। খাদ্য শস্য আমদানি না করায় স্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে মামলা দায়ের করে ইউক্রেন।
বুধবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে পোলিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা আর ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করছি না। কারণ এখন আমরা পোল্যান্ডকে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করার চেষ্টা করছি।
তবে ইউক্রেনে অস্ত্র রফতানি একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে না। কারণ পোলিশ অস্ত্র নির্মাতা পিজিজেড আগামী মাসগুলোতে কিয়েভে অস্ত্র পাঠানোর কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে ব্যাখ্যা করে পোলিশ সরকারের মুখপাত্র পিওতর মুলার বলেছেন, অতীতের চুক্তি মোতাবেক অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানো হবে।
পোলিশ প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন,কিয়েভ যদি শস্য নিয়ে বিরোধকে আরও বাড়িয়ে তুলে তাহলে আরও ইউক্রেনীয় পণ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।