বেইলি রোডে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন মুন্সীগঞ্জের প্রিয়তি। তিনি সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। জারিন তাসনিম খান প্রিয়তি (২০) মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর এলাকার অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন খানের ছোট মেয়ে।
শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে প্রিয়তির মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানা যায়, প্রিয়তির বড় বোন তাসনুভা খান সুহা মেয়েসহ কানাডা থেকে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় আসেন। পরদিন পরিবার নিয়ে বোনের সঙ্গে ইস্কাটনের বাসায় দেখা করতে যান প্রিয়তি। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে সুহা তার মেয়ে সায়বা ও মামি-শাশুড়িসহ প্রিয়তিকে নিয়ে ডিনার করতে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় যান। আগুন লাগার পর রেস্তোরাঁ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সেখান থেকে তিন জন বের হতে পারেন। তবে বের হতে পারেননি প্রিয়তি। আগুনে অঙ্গার হয়ে যায় প্রিয়তির দেহ। পরে ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।
প্রিয়তির ছোট খালা লিজা আক্তার জানান, সুহার কাছ থেকে যতটুকু শুনেছি, যখন আগুন লাগে তখন ওর বড় বোনের হাত ধরে কথা বলছিল। আগুন লাগার পর সুহা তার হাত ধরে টান দেয়। যখন আগুনের গোলাটা দুই জনের মাঝখান দিয়ে যায় তখন প্রিয়তি ছিটকে ভেতরে পড়ে যায়। ওকে সামনে আর দেখছিলেন সুবা। তারপর মেয়েকে (সায়বা) নিয়ে বাইরে চলে আসে। বাইরে থেকে দুই-তিনবার মোবাইলে ফোন দিয়ে বলে, তুমি কোথায় আছো? এ সময় প্রিয়তি জানায়, আপু আমি ধোঁয়ায় কিছুই দেখছি না। তারপর আর তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রিয়তির মামা জাকারিয়া হাবিব বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার কারণে আজ আমার ভাগনি মারা গেলো। ঘটনার পর পর গেট আটকে রেখে লোকজনকে বাইরে যেতে দেয়নি। যদি গেটটি খুলে দিতো তাহলে অন্তত জীবন নিয়ে আজ আমার ভাগনি বেঁচে ফিরতো। এমন অকাল মৃত্যু যেন আর কারও না হয়। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
শুক্রবার জুমার পর জানাজা শেষে প্রিয়তিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।