X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবার ঘণ্টা বাজবে স্কুলে, ক্লাসে ফিরবে শিক্ষার্থীরা

আবদুল মান্নান
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:০৪আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:০৪
আবদুল মান্নান শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই মাসের ১২ তারিখ থেকে দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস পর খুলছে স্কুলের দরজা। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বন্ধ হয়েছিল, তা আবার নানা ফর্মুলা প্রয়োগ করে খুলবে। স্কুল খোলার ফর্মুলাটা অনেক অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাছে বেশ জটিল মনে হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে সুখের বিষয় হচ্ছে, তারপরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুলের দরজা খোলার ঘোষণা দিয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি স্বস্তির বিষয়, যদিও অনেক অভিভাবক বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে দোদুল্যমনতায় ভুগছেন। বাস্তবে বেশিরভাগ অভিভাবক বলতে পারবেন না স্কুল বন্ধকালীন তারা বাচ্চাদের একেবারে গৃহবন্দি করে রাখতে পেরেছিলেন।

সারাবিশ্ব এখন কোভিড-১৯, যার ডাকনাম করোনা, তাতে জেরবার। এটি একটি ভয়াবহ অতিমারি, যা বিশ্বের প্রায় সব দেশকে আক্রমণ করেছে। শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনে। এখন তার বিশ্বায়ন ঘটেছে। এযাবৎ সারা বিশ্বে সাড়ে ৪৫ লাখের বেশি মানুষ এতে প্রাণ হারিয়েছেন। এতে বিশ্বে এক নম্বর অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র। তারপরের অবস্থানটি ভারতের। কখনও কখনও ভারতের স্থান দখল করে ব্রাজিল। এই মহামারিকালে সব দেশের প্রতিটি খাত কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। দেশটিতে ৩১ আগস্ট সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এ অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। এই কৃতিত্বের দাবিদার নিঃসন্দেহে প্রধানমন্ত্রী। তিনি মহামারিটি বাংলাদেশে আঘাত হানার আগেই কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। আগাম টাকা দিয়ে কিনে রেখেছিলেন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত যুক্তরাজ্য আর সুইডেনের মালিকানাধীন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। যদিও পরে তারা টিকার ধারাবাহিক সরবরাহের অঙ্গিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও আছে দেশের চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবা কর্মীদের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু অব্যবস্থাপনার বিষয় অস্বীকার করার জো নেই। ইন্দোনেশিয়ায় দিনে দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই মহামারিতে। আগস্টের ২৬ তারিখে মালয়েশিয়ায় কোভিড-১৯-এ  মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৯৩ জন।

কোভিড-১৯-এর কারণে দেশের ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বেড়েছে সামাজিক দূরত্ব। আপন হয়েছে পর। অন্যদিকে অনেক ক্ষেত্রে নতুন নতুন বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তবে সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থার। ইউনিসেফের হিসাব মতে, সারা বিশ্বে আনুমানিক ১৭ কোটি শিশু স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কোভিড মহামারি রূপ নেওয়ার পরপরই দেশে দেশে প্রথমে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে স্কুলগুলো। শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন দেশ নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। কোনও কোনও দেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখনও বন্ধ করেনি। কারণ, বাবা-মা দু’জনকেই কর্মক্ষেত্রে যেতে হয়। বাচ্চা রাখবে কার কাছে। তাদের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা মনে হয়েছে বাচ্চাদের স্কুল। এটি হয়েছে ইউরোপের বেশিরভাগ স্কুলে। তবে সেখানে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে স্কুল খোলা ছিল প্রথম দিকে। তবে যখন পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে, তখন তারাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের  সব অঙ্গরাজ্যে একসঙ্গে একই সময় স্কুল বন্ধ ছিল, তেমনটি ঘটেনি। এখন সংক্রমণ কমতির দিকে, তাই সব অঙ্গরাজ্যে স্কুল খোলা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি আইদাহো অঙ্গরাজ্যে কোভিড স্বমূর্তিতে আবার ফিরেছে।

এ জন্য সেই রাজ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার বন্ধ করা হয়েছে। এই খোলা-বন্ধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার সঙ্গে প্রায় সব দেশেই দূরশিক্ষণ অর্থাৎ অনলাইনে পড়ালেখা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এই অনলাইনে পড়ালেখায় বেশি সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ। কারণ, অনলাইনে শিক্ষার জন্য যেসব মাধ্যম লাগে বা ইন্টারনেটের গতি যতটুকু থাকা উচিত তা বাংলাদেশে কখনও ছিল না। প্রয়োজনীয় ডিভাইস বা মাধ্যম ক্রয়ের সীমাবদ্ধতা অনেক দেশের শিক্ষার্থীদেরও  আছে, বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়।

উন্নত দেশসমূহে যখন অনলাইনে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলো তখন তাতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কারণ, সেসব দেশে অধিকাংশ বিষয় পঠন-পাঠনের জন্য পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হওয়া যায় না। একজন ছাত্রকে  প্রায় সব বিষয়ে পড়া তৈরি করার জন্য গ্রন্থাগারের ওপর নির্ভর করতে হয়। ঘাঁটতে হয় অনেক রেফারেন্স। তবে সেসব দেশের উন্নতমানের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে যেকোনও ছাত্র অনলাইনে তার প্রয়োজনীয় রেফারেন্স পেতে পারে, যা আমাদের দেশে সীমিত পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাড়া অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।

এবার স্কুল-কলেজ পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে দুটি কথা বলা যাক। বাংলাদেশে হাইস্কুল আছে প্রায় ২৪ হাজার আর প্রাইমারি ও প্রাক-প্রাইমারি আছে এক কোটি ৬৩ লাখের বেশি। এসব স্কুলে পড়ালেখা করে প্রায় চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী (প্রাক-প্রাইমারিসহ)। ২০২০ সালের মার্চ থেকে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বাংলাদেশে শিক্ষার বিষয়টি দেখা শোনা করার দুটি মন্ত্রণালয় আছে। আরও আছে একাধিক অধিদফতর। তবে সাম্প্রতিককালে তাদের কার্যকলাপে বেশ অসঙ্গতি লক্ষ করা যায়। শুরুতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলো। কিন্তু কওমি মাদ্রাসাগুলোতে থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী বহাল তবিয়তে তাদের পড়ালেখা আর পরীক্ষা চালিয়ে গেলো। কওমি মাদ্রাসার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে কমপক্ষে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। এরা অনেকটা সরকারের ভেতর সরকার।  অবশ্য সম্প্রতি সরকার তা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মধ্যে তেমন বাহাদুরি নেওয়ার কিছু নেই। বরং এর পরিবর্তে কার্যকর অন্য কিছু উদ্ভাবন করা যায় কিনা তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড-১৯ একটি নতুন সর্বগ্রাসী সমস্যা। এ  কারণে এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন ছিল সৃজনশীল চিন্তাধারা, যার ঘাটতি দেখা গেছে বাংলাদেশে। ২০২০ সালের এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া যেত চিন্তাধারায় একটু পরিবর্তন করলে। যখন সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে, তার কয়েক সপ্তাহ পর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমনা পরীক্ষা কলেজে নেওয়া হয়। তখন এই পরীক্ষার পাঠ্যসূচি কমিয়ে,পরীক্ষার ঘণ্টা কমিয়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব ছিল। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলের সুযোগ-সুবিধাও ব্যবহার করা যেতে পারতো। তখন যেহেতু টিকা আবিষ্কার হয়নি, তাই সবাই যাতে মাস্ক পরার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার, আর হাত ধুতে পারার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন হতো। এ জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নেওয়া যেতো সরকারের অন্যান্য সংস্থা থেকে, যেমন- আনসার বা ভিডিপি।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৯টি দেশে কখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা করা হয়নি। এরমধ্যে বাংলাদেশও আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার তালিকার শীর্ষে আছে বাংলাদেশ ও ভেনিজুয়েলা। অনেক দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে, আবার পরিস্থিতির কারণে বন্ধ করা হয়েছে। বাংলাদেশে এই প্রচেষ্টাও কখনও করা হয়নি। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও’র বাইরে, তার অনেকগুলো চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। সেদিকে কেউ নজর দেয়নি। এই ঢাকা শহরে কমপক্ষে দুই হাজার কিন্ডার গার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে, যার অধিকাংশই আর খুলবে মনে হয় না। বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে যেসব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছিল তার মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্র অন্যতম। এই কোভিডকালে তার সবকিছুই প্রায় হারিয়ে গেছে। স্কুল পর্যায়ের প্রায় ৪০ ভাগ শিক্ষার্থী আর স্কুলে ফিরবে না বলে ধারণা করা হয়, যার অধিকাংশই ছাত্রী। কারণ, বাল্যবিবাহ।

এ অঞ্চলে শুরু থেকেই স্কুল প্রায় বন্ধ হয়নি। বলতে গেলে প্রথমে যে দেশটির নাম বলতে হয় তা হলো দক্ষিণ কোরিয়া। হংকংয়েরও কোনও স্কুল কখনও বন্ধ হয়নি। কারণ, সেখানে বায়ুদূষণের কারণে ছোট-বড় সবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরার অভ্যাস দীর্ঘদিনের। আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কোভিড-১৯ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়া। সেই ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ৩০ আগস্ট ছয়শত স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপেও যারা স্কুল খোলেনি তারা খুলতে শুরু করেছে। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে তারা।

বাংলাদেশে যে আগামী ১২ তারিখে স্কুল খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা নিঃসন্দেহে ভালো খবর। তবে তা সঠিকভাবে কার্যকর করতে দরকার সংশ্লিষ্ট সবার প্রচেষ্টা। শুরু হবে স্কুল পর্যায় থেকে। তবে এখন পর্যন্ত পরিষ্কার নয় খোলার বিস্তারিত প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি কী হবে। বলা হয়েছে, প্রথমে এসএসসি, এইচএসসি আর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পালা করে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাসে আসবে। অন্যরা সপ্তাহে একদিন পালা করে সপ্তাহে ক্লাসে আসবে। প্রাক-প্রাইমারি আপাতত বাড়িতে থাকবে। দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর তা খোলা হবে সবার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। সেটা শিক্ষার্থী হোক বা অভিভাবক অথবা শিক্ষক। সবাইকে একটু সংবেদনশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আমরা এখানে অল্প বয়স্ক বালক বালিকাদের কথা বলছি। তাদের শিক্ষাজীবন থেকে মূল্যবান দেড় বছরেরও বেশি সময় হারিয়ে গেছে। স্কুল দেখেনি প্রথম শ্রেণির বাচ্চারা বা যারা নতুন ভর্তি হতো তারা। যারা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তারা কলেজ কী তা দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যেসব বাচ্চা এখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো তারা কোথায় থাকবে তাও পরিষ্কার নয়। তাদের সংসদ টিভি দিয়ে পাঠদানের দুর্বল চেষ্টা করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে তারা কতটুকু শিখলো তা যাচাই করতে হবে। শুরুতে শিক্ষকদের শিক্ষকসুলভ আচার আচরণ বাদ দিয়ে তাদের হতে হবে কাউন্সিলর। শিক্ষার্থীদের একটু সহজ করে নিতে হবে। এই কাজটি তেমন একটা সহজ নয়। সরকার এই কাজে সহায়তা করার জন্য মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তা নিতে পারে। শিক্ষক আর অভিভাবকদের শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মানছে কিনা সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। শুধু সেসব স্কুলই খোলা যাবে যেসব স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীরা টিকা নিয়েছেন। যারা নেননি তাদের টিকা নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, এই শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ। সব শেষে যেসব শিক্ষক আর্থিক কারণে এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন, ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। আর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলোকে প্রণোদনা দিয়ে আবার শিক্ষা পরিবারের অংশ করে নিতে হবে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হওয়ার সঠিক সময় এখনও ঘোষণা করা যায়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যারা পড়ালেখা বা প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত অথবা যারা আবাসিক হলে থাকে, ক্লাস শুরু হওয়ার আগে তাদের টিকা দেওয়া জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশা প্রকাশ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় অক্টোবরে খুলে দিতে পারবেন। তবে একটা কথা না বললেই নয়, বাংলাদেশে বেশক’টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস রুমেই সশরীরে পরীক্ষা নিয়েছে বিভিন্ন সময়। একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গত সপ্তাহে প্রায় ৬৬  হাজার শিক্ষার্থীর সশরীরে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে। তারা পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে একটু উদ্ভাবনীর পরিচয় দিয়েছে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলো একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি; বরং একটি বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকায় তারা সেখানে কোভিড টেস্ট করার সেবা দিতে পেরেছে। গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে অনেক দিন ধরে। এমনকি মহামান্য রাষ্ট্রপতিও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের  বঙ্গভবনে ডেকে নিয়ে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু গোটা পাঁচেক বিশ্ববিদ্যালয়ের একগুঁয়েমির কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়েছে। তাদের অভিনন্দন জানাতে হয়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও আবাসিক হল নেই সেখানে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে টিকার ব্যবস্থা করে বহু আগে খুলে দেওয়া যেতে পারতো। এ বিষয়ে কেউ কার্যকর কোনও চিন্তা করেছেন, তা মনে হয় না।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হোক, এই কামনা করি।

লেখক: সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ।
/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
টিভিতে আজকের খেলা (২৫ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৫ এপ্রিল, ২০২৪)
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ