X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে গবেষণা কেন গুরুত্বপূর্ণ

সুলতান মাহমুদ
০৬ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২৪আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২২, ১৯:২৪

বিশ্বমহামারি করোনার অভিঘাতে সারা বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মহামন্দার সম্মুখীন এবং কোটি কোটি মানুষ যখন মৃত্যুচিন্তায় চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন পার করছিল, তখন প্রতিষেধক টিকার উদ্ভাবন  প্রমাণ করেছে গবেষণা কতটা গুরুত্বপূর্ণ জীবন ও জীবিকার জন্য।  

গবেষণায় বিনিয়োগের সঙ্গে উদ্ভাবন এবং আবিষ্কারের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যে দেশগুলো যত বেশি গবেষণায় বিনিয়োগ করেছে, তারা তত বেশি আবিষ্কার ও উদ্ভাবনী শক্তি প্রয়োগে দ্রুত উন্নতি লাভ করে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। একটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পেছনে নিজস্ব উদ্ভাবন বা গবেষণার কোনও বিকল্প নেই, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে।

বাংলাদেশ এখন বিশ্ব অর্থনীতির উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিতে বিশ্বে সমাদৃত। স্বাধীনতার জন্মলগ্নে, আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ও জাপানে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইউ এলেক্সিস জনসন বাংলাদেশকে ‘বাস্কেট কেস বা তলাবিহীন ঝুড়ি’ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এতে সায় দিয়ে বুঝিয়েছিলেন যে আজন্মকাল এই দেশ অর্থনৈতিক পরনির্ভরতার গ্লানি থেকে মুক্তি পাবে না। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, বরং অপার সম্ভাবনাময় দেশ। কৃষি গবেষণার উন্নয়নের ফলে ২০১৪ সাল থেকে খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ প্রায় ৯০% স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় হলেও রফতানিতে প্রথম, ধান ও আলু উৎপাদনে যথাক্রমে তৃতীয় ও ষষ্ঠ, সবজি ও মাছ উভয় উৎপাদনে তৃতীয়, কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, আম ও পেয়ারা উভয় উৎপাদনে অষ্টম, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ, ছাগলের দুধ উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে নবম, গবাদিপশু পালনে দ্বাদশ, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং জলবায়ু সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের ৮৬ ভাগই হয় বাংলাদেশে।

 কোভিড-১৯ বিশ্বমারি দেখিয়ে দিয়েছে, টেকসই কৃষি উন্নয়ন কতটা অত্যাবশ্যক। এমন একটা জরুরি পরিস্থিতিতে দেশের সুষ্ঠু ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ‘সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’ ছিল সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। মহামারি করোনাভাইরাস, ৩১ জেলায় বন্যা, ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড় আমফানসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখতে কৃষি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করায় আজ তার সুফল পাচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে সব থেকে বড় সাফল্য হতে যাচ্ছে বিশিষ্ট জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর উদ্ভাবিত এক রোপণে ৫ ফলনের ধান পঞ্চব্রীহি জাতের উদ্ভাবন।

বিআইডিএস ২০১৫-এর একটি গবেষণা বলছে, তৈলবীজ (যেমন সরিষা, চীনাবাদাম, তিল ও সয়াবিনের জাত ইত্যাদি) গবেষণার ওপর বিনিয়োগের ইন্টারনাল রেট অফ রিটার্ন (আইআরআর) ২৪%, কোনও ক্ষেত্রে এটা ২২% থেকে ২৬% পর্যন্তও হয়ে থাকে (মিয়া এম.এ.এম. ইটি এএল., ২০১৫)।

গত এক দশক ধরে টেকসই সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলোর বিপরীতে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হচ্ছে, যেমন- মাথাপিছু জাতীয় আয়, রফতানি ও রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি, মানবসম্পদ সূচকে উন্নতি, পরিবেশগত এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচনে একটা বড় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে দেশটি।

বাংলাদেশে দারিদ্র্যতা দূরীকরণের ওপর বেশ কিছু ভালো মানের গবেষণা হয়েছে। যার সুফলস্বরূপ, দেশটি ২০ বছরের মধ্যে প্রায় ৩০% দারিদ্র্য দূরীকরণে সমর্থ হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দরিদ্র (নিঃস্ব) মানুষকে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান এবং বিআইএসআর ট্রাস্ট-এর চেয়ারম্যান ড. খুরশিদ আলমের দারিদ্র্য বিমোচনে এনাবেলিং ফ্যাক্টর, ইত্যাদি মডেল দেশে বিদেশে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য ২০১৯ অনুযায়ী, বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২০.৫%, যা ২০০০ সালে ছিল ৪৮.৯%। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) এবং ইউনিভার্সিটি অব বাথের মতে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫.৮৭%, যেখানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগের অনুমান অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত দেশের দারিদ্র্য বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৯.৫%। কোভিড-১৯ অতিরিক্ত ১৮.৫৪% ‘নতুন দরিদ্র’ যোগ করেছে নিশ্চলতা-স্ফীতি  এবং প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চেয়ে ধীরগতি হওয়ার  কারণে (পিপিআরসি এবং বিআইজিডি ২০২২)। অর্থাৎ কোভিড-১৯ পূর্ববর্তী, ২০০০-২০০১ অর্থবছর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে দরিদ্রের হার কমেছে গড়ে ১.৬২ %। বহুমুখী গবেষণা, সরকারি এবং বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, রেমিট্যান্সের সদ্ব্যবহার, মোবাইল এবং এজেন্ট ব্যাংকিং বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।  

জাতিসংঘের শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো প্রকাশিত বিজ্ঞান প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশ বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ওষুধ রফতানিকারক। ১৯৭২ সালে ওষুধের বাজার ছিল ১০০ কোটি টাকার কম। এরমধ্যে ৯০ শতাংশ ছিল আমদানি করা ওষুধ। এখন ওষুধ উৎপাদনে বিন্দু থেকে মহীসোপানে বাংলাদেশ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি আয় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯৮ শতাংশ এখন দেশীয় কোম্পানির দখলে। বাংলাদেশ ওষুধে উৎপাদনে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পথে।  

বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রে, ইউরোপ, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কাসহ শতাধিক দেশে ওষুধ রফতানি করছে। জীবাণু-প্রতিরোধী অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে যখন ক্রমশই উদ্বেগ ও হতাশা বাড়ছে, তখন পাট থেকে নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেয়েছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা।

আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানী ডা. রফিকুল ইসলামের খাবার স্যালাইন বা ওরস্যালাইন উদ্ভাবন, ড. মোবারক আহমেদ খানের উদ্ভাবিত পাটের তৈরি পলিথিন, অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতারের প্রসূতির রক্তপাত বন্ধের পদ্ধতি উদ্ভাবন (বিশ্বব্যাপী এটি সায়েবা’স মেথড হিসেবে পরিচিতি), অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিনের খাবার লবণের সাথে আয়োডিন মিশ্রণ এবং ড. আবুল হুসসামের আর্সেনিক সনো ফিল্টার উদ্ভাবন বিশ্বব্যাপী বেশ সাড়া ফেলেছে। বিশ্ব বিখ্যাত জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট তাদের ১৯৭৮ সালের আগস্টের সম্পাদকীয়তে বলেছিল, ওরস্যালাইনের উদ্ভাবন চিকিৎসার ক্ষেত্রে শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ডায়রিয়া প্রতিবছর ৫ লাখ ২৫ হাজার শিশুর মৃত্যুর কারণ এবং বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ ডায়রিয়া। সেই হিসাবে ওরস্যালাইন উদ্ভাবন বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কোটি শিশুর জীবন বাঁচিয়েছে।

উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী ডিজিটালাইজেশন এবং প্রযুক্তিগত বিকাশের জন্য বাংলাদেশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আইসিটি পণ্য রফতানি করেছে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের মতো একটি উদীয়মান অর্থনীতির সুষ্ঠু বিকাশ নিশ্চিত করার অন্যতম প্রধান স্তম্ভরূপে প্রতীয়মান হয়েছে, কিন্তু গ্লোবাল নলেজ ইনডেক্স ২০২১ অনুযায়ী, ১৫৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২০তম (ভারত ৯৭তম) স্থান করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি উন্নয়নসহ সাতটি বিষয় বিবেচনা করে ১০০-এর মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ৩৮.১। গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবন (১০০-এর মধ্যে ১৯.২) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (১০০-এর মধ্যে ২৮.৩) খাতের পরে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ১০০-এর মধ্যে ৩৬.৩ স্কোর করে সবচেয়ে নাজুক অবস্থানে রয়েছে।

বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সুনাম গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ৫ ধাপ পিছিয়ে। সরকারের উচিত গবেষণা ও উদ্ভাবনে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, যদিও গবেষণার জন্য বাজেট বরাদ্দ (২০২১-২২ অর্থবছরের মোট বাজেটের  ১%-এরও কম) এখনও নগণ্য অবস্থানে রয়েছে।

বর্তমান বিশ্বে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি। শিক্ষা নিয়ে যে গবেষণার দরকার রয়েছে তার সংস্কৃতি আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষার ভিত্তি গড়ে না উঠলে এর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করে রাষ্ট্র-উন্নয়নে দক্ষ ও মেধাবী জনশক্তি গড়ে তোলা বেশ চ্যালেঞ্জিং। আমাদের দেশের শিক্ষার অন্যতম বড় সীমাবদ্ধতা হলো চাহিদাভিত্তিক পাঠক্রমের অভাব।

সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে বর্তমানে শিল্পপতিরা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলেছে টেকনোলজিভিত্তিক শিল্পায়নের নিমিত্তে, বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে।

ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অটোমেশনের কারণে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮০ কোটি শ্রমিক তাদের পেশা হারিয়ে ফেলতে পারে ২০৩০ সাল নাগাদ। আসন্ন সংকট বিবেচনা করে, উন্নত এবং দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলো গবেষক গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য জিডিপির শতকরা ১ থেকে ৩ ভাগ এবং ক্ষেত্রবিশেষে তারও বেশি ব্যয় করছে। ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অরগানাইজেশন-এর গ্লোবাল ইনভেশন ইনডেক্স ২০১৯ অনুযায়ী, গবেষণায় বিনিয়োগে জিডিপির অনুপাতে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হলো, ইসরায়েল (৪.৫৮%), দক্ষিণ কোরিয়া (৪.৫৫%), সুইজারল্যান্ড (৩.৩৭%), সুইডেন (৩.৩১%) ও জাপান (৩.২০%)।

একবিংশ শতকের সমাজ, ব্যক্তিজীবন এবং জীবিকার সম্ভাব্য সব জটিল সমস্যার সর্বোত্তম সমাধান এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ, বাজেটের অপচয় রোধ এবং বাস্তবায়নে উদ্বোধনী হওয়া, বাজার ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ, জননিরাপত্তা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং আগামী দিনের অনিশ্চয়তা থেকে জাতিকে রক্ষার ক্ষেত্রে সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণায় বিনিয়োগের কোনও বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও গবেষণায় বিনিয়োগের ব্যাপারে এখনও বেশ পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশে মানসম্পন্ন গবেষণা না হওয়ার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে গবেষণা সাফল্যকে যথাযথ মূল্যায়ন না করা এবং মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অনেকটা উদাসীনতা এবং অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা।

কৃষিতে প্রচুর গবেষণা হয়েছে, ফলে বাংলাদেশ কৃষিতে উন্নতি করছে। একইভাবে শিল্প, স্বাস্থ্য, সামাজিক বিজ্ঞান ইত্যাদি খাতে গবেষণা নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে গবেষণা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ এখন নিম্ন মাধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সব মানদণ্ডের বিপরীতে দেশের ধারাবাহিক আর্থসামাজিক অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। এ ধারা অব্যাহত রাখতে, বাংলাদেশকে গুণগত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন, শিল্পে (আইসিটি) এবং গবেষণায় গুরুত্ব দিয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। টেকসই সমৃদ্ধি অর্জনে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাকে গুরুত্ব দিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা বাড়াতে হবে।

লেখক: গবেষক, অর্থনৈতিক বিভাগ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব সোশাল রিসার্চ ট্রাস্ট।

Email: [email protected]

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ