X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমার আকাশে কতটা ভালো আছে ‘আমার মিতু’

বেলায়েত হোসাইন
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:৩১আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৭

বেলায়েত হোসাইন কেন জীবনের ওপর থেকে মানুষের আস্থা ওঠে যায়? কেন মৃত্যুর মতো একটা ধ্রুব সত্যকে মানুষ অভিমানের চূড়ান্ত প্রকাশের ভূমিকায় নিয়ে যায়? অভিমান বলে কি আসলে কিছু আছে? রাগ, অনুভূতি কিংবা আবেগ! এগুলোও গুজব নয়তো। জীবনের হিসাব আসলে কতটা জটিল। একসাথে চলা যায়? নাকি যায় না। নাকি কিছুদিন যায়। এরপর যে যার মতো করে আলাদা চিন্তায় মগ্ন হতে হয়? কেন ভালোবাসার স্রোতে সব সময় গা ভাসাতে হয় না? কেন গতকালের অনুভূতি আর পথচলাকে আজ এসে ভুল মনে হবে? মনের বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষ কেন গ্রন্থের বিদ্যার পথে হেঁটে সহজ জিনিসটাকে ভুল প্রমাণের চেষ্টা করে? জীবন কি সব সময় বইয়ের পাতার মতো করে চলবে? নাকি কৃত্রিমভাবে দাঁড় করানো পরিশুদ্ধ একটা স্ট্রাকচার মেনটেইন করবে। কেন সমাজের চিহ্নিত অন্যায় নিয়ে না ভেবে ভুলগুলোকে বড় করে দেখতে হবে? কেন অধিকারবোধ দেখালে অভিযোগের ফিরিস্তি জমিয়ে দিতে হবে? সম্পর্ক মানে কি অধিকার নয়? সম্পর্ক মানে কি অভিমান নয়? প্রশ্ন আর প্রশ্ন। কত প্রশ্নের উত্তর আছে আমাদের কাছে।

আকাশ-মিতু।  ফেসবুকজুড়ে হাহাকার। ক্রন্দন। কথার ফুলঝুরি। গদ্যে-পদ্যে রচিয়তাদের ভিড়। নানান ধর্মী, নানান ধর্মে, নানান চিন্তায় আহারে বিশ্লেষণ! বিশ্লেষণের ভারে ঘুম আসে না চোখে। অথচ,আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেই একটা করে আকাশ বেঁচে থাকে। হৃদয়ে একটা করে মিতু আঁকা থাকে। সেই মিতুকে নিয়ে আমরা কতটা ভাবি। কতটা নিজের আকাশের দিকে খোলামনে তাকিয়ে দেখি। কী আছে ওখানে? শুধুই নীল? নাকি মাঝেসাঝে ধবধবে সাদা। আবার কখনো নাকি কালো মেঘের ছায়া। আচ্ছা,কখনও কি নিজের আকাশের কালো মেঘকে বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেতে দিয়েছি? নাকি বজ্রপাতের আঘাতের চাপ মিতুর ওপর চাপিয়ে দিয়েছি।

আমি সেই মিতুর কথা বলছি না, যে মিতুর ওপর অভিমান করে তার আকাশ আকাশে চলে গিয়েছে। আমি সেই আকাশের কথাও বলছি না। আমি বলছি তাদের কথা, যারা নিজের আকাশ এবং আকাশের ভেতরে লুকিয়ে থাকা মিতুর চিন্তা বাদ দিয়ে চট্টগ্রামের আকাশ-মিতুকে নিয়ে ব্যস্ত।

ভালোবাসা জিনিসটা একেকজনের কাছে একেক রকম। কিন্তু এর রঙ প্রায় একই। ভালোবাসায় সব সময় রঙ থাকে না অবশ্য। থাকতে হয়ও না। মাঝে মাঝে অসহ্য হয়ে যায়। তখন সেই ভালোবাসায় আমাদের আস্থা কতটুকু থাকে? ভালোবাসার যে মানুষ, তাকেইবা আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার ইচ্ছে কতখানি টিকিয়ে রাখা যায়?
ঠিকানা বদল কিংবা পৃথিবী বদলই কি একমাত্র সমাধান? আকাশ-মিতুর জীবনে যে অস্বাভাবিক ঝড় নেমে এসেছে, সেই ঝড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে তাদের দুই পরিবারের স্বাভাবিক পথচলা। কতটুকু নিশ্চয়তা আছে যে, আগামীকাল আমার-আপনার অবস্থাও আকাশ-মিতুর মতো হবে না।

আগেই বলেছি, আমাদের সবার নিজের মধ্যেই আকাশ আছে। মিতুও আছে। আমরা কেউ সেটাকে দমিয়ে রাখতে পারি, আর কেউ পারি না। ফলে মাঝে মাঝে আত্মহত্যার মতো একটা ঘৃণ্য সিদ্ধান্তের কথা শুনতে হয় আমাদের। সেই সঙ্গে মিতুদের জীবনে নেমে আসে করুণ পরিণতি আর সমাজের চোখে নানান রঙের বিশ্লেষণের গ্লানি। চলুন না তাদের নিয়ে পোস্টমর্টেম বাদ দিয়ে নিজেদের সম্পর্কগুলোর দিকে আমরা আরও বেশি মনোযোগী হই। যত ঝড়ই আসুক, ভালোবাসার হিমেল হাওয়ায় তাকে মিষ্টি করে তুলি। কিছুদিনের জন্য হয়তো সবকিছু ওলটপালট হয়ে যায়। কিন্তু সময়ের অপেক্ষায় আবার সব ঠিকও করে ফেলা যায়। শুধু অপেক্ষায় থাকতে হয় সততার। বিশ্বাস রাখতে হয় ভালোবাসায়। পার্টনার রিপ্লেসমেন্ট কিংবা জীবনের ইতি কখনোই সমাধান নয়।

গতকাল যেখানে সুখী ছিলাম, আগামীকালও সেখানেই সুখে থাকবো। মাঝে আজকের অপ্রীতিকর পরিস্থিতিকে ছাড় দিয়ে দেই। ভালোবাসায় বিরক্তি আসে। কিন্তু ভালোবাসার গভীরতা প্রখর হলে, সেই বিরক্তি ধোপে টিকে না। অভিযোগ, অভিমান, রাগ-অনুরাগ এসব ভালোবাসারই সৌন্দর্য। শুধু মূল্যায়ন করার মানসিকতাটা থাকতে হয়। এমন না যে, এসব রাগ,অনুরাগ-বিরাগ নিয়ে পড়ে থাকলে আপনি জীবন থেকে পিছিয়ে পড়বেন। বরং এসবের ঊর্ধ্বে ওঠার চিন্তাই আপনাকে এলোমেলো করে দিতে পারে।

জীবন এবং সম্পর্ক, একে অপরের পরিপূরক। জীবনের অন্যতম একটা অনুভূতি কারো অভিমান ভাঙানোর প্রাণপণ চেষ্টা। এ করেই না হয় জীবনটা কেটে যাক,একই ছাদের নিচে।

লেখক:  রিপোর্টার, সময় টিভি

 

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ