X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

ছক ভাঙতে নির্মাণে নারীরা, জানালেন সংকটের গল্প

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:২৩আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:২৩

এ তল্লাটে সিনেমার অঙ্কুরোদগমের প্রায় শতবর্ষ ছুঁইছুঁই। যদিও দেশ স্বাধীনের পর থেকেই নিজস্বতা নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ায় ঢাকার রূপালি জগত। লম্বা এই সময়ে নির্মাতার ভূমিকায় নারীদের উপস্থিতি একেবারে হাতেগোনা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সে শূন্যতা পূরণ হচ্ছে ক্রমশ।

নারীরা আত্মপ্রকাশ করছেন নির্মাতা-প্রযোজক হিসেবে, এগিয়ে আসছেন সিনেমাটোগ্রাফিতেও। এই অগ্রযাত্রা যে সহজ নয়, তা কমবেশি সবার জানা। মূলধারার ইন্ডাস্ট্রি তথা এফডিসি নয়, বরং স্বাধীন ধারার চলচ্চিত্র-সমাজই তাদের সামনে বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করেন সময়ের মেধাবী পাঁচ নারী চলচ্চিত্রকর্মী। 

তারা হলেন–নির্মাতা তাসমিয়াহ আফরিন মৌ, রুবাইয়াৎ হোসেন, এলিজাবেথ ডি কস্টা, হুমায়রা বিলকিস ও সিনেমাটোগ্রাফার রাওয়ান সায়েমা। দশম ঢাকা লিট ফেস্টের একটি সেশনে অংশ নিয়েই এমন অভিজ্ঞতার কথা জানান তারা।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে শুরু হওয়া সেশনটির নাম ‘থ্রো হার লেন্স’। বাংলা একাডেমির কসমিক টেন্টে অনুষ্ঠিত হয় এটি। এতে রুবাইয়াৎ হোসেনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন তিনজন নারী নির্মাতা ও এক চিত্রগ্রাহক।

কাজ করতে গিয়ে কেমন বাধার সম্মুখীন হন? এমন প্রশ্নের জবাবে তাসমিয়া আফরিন মৌ জানান, পথচলায় খুব একটা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি তিনি হননি। তবে অভিজ্ঞতা থেকে তার বক্তব্য, ‘নারী নির্মাতাদের জন্য মূলধারা তথা এফডিসির মানুষজন অত্যন্ত সহযোগিতাপরায়ণ। তারা কখনও নারী-পুরুষ বিভাজন করে না। কিন্তু আমাদের ক্লাসের মানুষেরাই একটা মুখোশ পরে থাকেন। যা মাঝেমধ্যে খুলে যায়।’

মৌ মনে করেন, “নারী নির্মাতাদের ওপর আস্থার সংকট অনুভব করেন বেশিরভাগ মানুষ। যেমন কিছুদিন আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি নতুন ২৫টি কনটেন্ট নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু সেখানে একজন নারী নির্মাতা নেই। এর আগে ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ নামে একটি অ্যান্থলজি ফিল্ম বানানো হয়েছিলো ১১ জন নির্মাতাকে নিয়ে। সেখানেও রাখা হয়নি কোনও নারী পরিচালককে। তাহলে কার চোখ দিয়ে তারা ঢাকাকে দেখেছে? এক্ষেত্রে সরকারি অনুদানের অবস্থা ভালো। সেখানে নারী-পুরুষ সমবণ্টন করে দেওয়া হয়। এবং সেটা কোটা হিসাবে নয়, যোগ্যতা বিচার করেই তারা দেন।”

তাসমিয়াহ আফরিন মৌ’র বক্তব্যের সঙ্গে সুর মেলান রুবাইয়াৎ হোসেনও। তিনিও বলেন, “নারী নির্মাতাদের ওপর আস্থা নাই। তারা আসলেই বানাতে সক্ষম হবে কিনা, এ নিয়ে তাদের মনে সংশয়। দেশের অন্যতম ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে এত কনটেন্ট, সেখানে নারী নির্মিত কাজ মাত্র দুটি। এবং সেটাও কিন্তু তাদের অর্থায়নে বা ব্যবস্থাপনায় নির্মিত হয়নি। বরং সেগুলো আগে থেকেই বানানো ছিল। তারা শুধু মুক্তি দিয়েছে। এক্ষেত্রে এফডিসির লোকেরা কখনও সমস্যা করেন না। তারা হয়ত অত শিক্ষিত না কিংবা কেউ কিংবা নিরক্ষর। তারা শুধু দেখে—কাজটা করতে পারবো না।”

দেশের একমাত্র নারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন রাওয়ান সায়েমা। নিজের পথচলা নিয়ে এই তরুণী বলেন, ‘বাবা কলেজের শিক্ষক। সেই সুবাদে ছোটবেলা থেকেই প্রচুর বই পড়ার সুযোগ হয়েছে। এ কারণে বন্ধু-বান্ধবরা আমাকে বলতো, স্ক্রিপ্ট রাইটার হতে। কিন্তু আমি বলতাম, আমি সিনেমাটোগ্রাফার হতে চাই। আমি কারও ওপর নির্ভর করতে চাই না। সেজন্য ফিল্মিং, এডিটিং, সব শিখেছি।’

একটি কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাওয়ান বলেছেন, ‘অনেক বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয় কাজ করতে গেলে। একটি প্রজেক্টে আমি মূল সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে যুক্ত হই। সেটে যাওয়ার পর সহকারী সিনেমাটোগ্রাফার এসে আমার কাছেই জানতে চান, সিনেমাটোগ্রাফার কে? আমি যখন তাকে পরিচয় দেই, সে বিস্মিত হয় এবং বলে কাজটি করতে পারবে না। পরে তাকে অনেক বুঝিয়ে সেই কাজ করতে হয়েছিল।’

নির্মাতা এলিবাজেথ ডি কস্টা জানান, তার জন্ম-বেড়ে ওঠা খ্রিস্টান পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই বাবা তাকে সমাজের নানান রক্ষণশীলতায় অভ্যস্ত করতে চেয়েছেন। কিন্তু সেটা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি তিনি। কারণ তিনি উপলব্ধি করেছেন, মানুষ হিসেবে তারও অনেক কিছু বলার আছে, বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করার অধিকার রয়েছে। নিজেকে প্রমাণের জন্যই সিনেমাকে বেছে নেন তিনি।

এলিজাবেথ মনে করেন, “বৈষম্য দূর করতে হলে আগে সমাজের মাইন্ডসেট ঠিক করতে হবে। এখনও অনেকে বলেন, মিডিয়াতে কাজ করি মানে খারাপ কাজ করি। আমার বাবাকে শুনতে হয়েছে, ‘মেয়ের বয়স হয়েছে। কুড়িতে বুড়ি, কেন বিয়ে দিচ্ছেন না’। তো সমাজের এই দৃষ্টিকোণ ঠিক না হলে তো সমাধান হবে না।”

নির্মাণে আসার প্রসঙ্গে হুমায়রা বিলকিস বলেছেন, ‘আমরা সবসময় ভাবি, লোকে কী বলবে! এটা ভাবতে গিয়ে আসলে আমরা লোকের জীবনটা যাপন করি, নিজের মতো আর বাঁচা হয় না। দেশের অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা এরকম। আমি এই পথে হাঁটতে চাইনি। ছোটবেলায় আমি পেইন্টার হতে চেয়েছিলাম। বড় হয়ে সেটা সিনেমায় কনভার্ট হয়েছে।’

/কেআই/এমএস/
টাইমলাইন: ঢাকা লিট ফেস্ট ২০২৩
০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৩১
০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:৫২
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২৪
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৪৫
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৫৪
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৩১
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:৫১
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:১১
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৫
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৪
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:৫০
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:২২
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২৮
০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৯
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ২১:৩৫
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৯
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:২৩
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:২০
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭:১৭
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:২৩
ছক ভাঙতে নির্মাণে নারীরা, জানালেন সংকটের গল্প
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:১১
০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:১৮
সম্পর্কিত
বলে নজর রাখো: গর্ডন গ্রিনিজ
সাক্ষাৎকারআগের চেয়ে মহামারির আশঙ্কা বেড়েছে: সারাহ গিলবার্ট
সাক্ষাৎকারলেখালেখির আনন্দ হলো ভাষার নানা সম্ভাবনা: আবদুলরাজাক গুরনাহ
সর্বশেষ খবর
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা