শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে চলবে— এই শর্তে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে শনিবার (২৮ অক্টোবর) ঘোষিত সমাবেশ শুরুর আগেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ। হঠাৎ করে হামলা শুরু করে বিএনপির কর্মীরা। বেলা ১টার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে তারা। এখান থেকে ধীরে ধীরে কাকরাইল, পল্টন, শান্তিনগর, আরামবাগ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও ডিএমপির ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরাই প্রথমে সরকারি স্থাপনায় হামলা করেছে। বিএনপি কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে করার কথা দিয়েছিল। ডিএমপি কমিশনারের কাছ থেকে তারা এমন শর্তেই অনুমতি নিয়েছে। হঠাৎ করে বেলা ১২টার পর থেকে তারা প্রধান বিচারপতির বাড়ির ফটকে ও জাজেস কোয়ার্টারের সামনে (বিচারকদের বাসভবন) আক্রমণ করেছে। আইডিবি ভবনের সামনে দুটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। পুলিশ সেটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে।
ঘটনাস্থল থেকে বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদকরা জানান, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের ডাল ভেঙে ও হাতের লাঠি দিয়ে নামফলক, গেটে হামলা চালায়। তারা ভেতরে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এর মধ্যেই কাকরাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দেয় বিএনপির অনুসারীরা। পুলিশ বাধা দিতে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংর্ঘষ বাধে।
এই ঘটনার রেশ ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে।
রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপি সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক দফায় টিয়ারশেল ছোড়া হয়। দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় বিএনপির সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে পুলিশ।
নয়া পল্টনের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পরে কাকরাইল, সেগুনবাগিচা, হাইকোর্ট এলাকা, পল্টন থেকে বিজয়নগর পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত সাংবাদিক, পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সমাবেশ কেন্দ্রিক পুরো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। ঘণ্টাখানেক পর সন্ধ্যা নাগাদ সংঘর্ষপ্রবণ এলাকাগুলো পুলিশের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।