চট্টগ্রাম মহানগরীতে বসবাসরত ৭০ লাখ বাসিন্দার জন্য গণশৌচাগার বা পাবলিক টয়লেট রয়েছে মাত্র ২৭টি। অর্থাৎ গড়ে তিন লাখ ৫০ হাজার বাসিন্দার জন্য পাবলিক টয়লেট মাত্র একটি। যেগুলো আছে এরমধ্যে অনেকগুলোর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। নগরীর কোনও পাবলিক টয়লেটে নেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জীবাণুনাশকের (সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার) ব্যবস্থা। কোনও কোনও পাবলিক টয়লেট অত্যন্ত নোংরা। ভাঙা দরজা। অনেক দরজায় হুক নেই। জোড়াতালি দিয়ে চলছে। আবার নারী, পুরুষ ও শিশুদের জন্য একই টয়লেট। সরেজমিন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত কয়েকটি পাবলিক টয়লেটের এমন অবস্থা দেখা গেছে।

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকায় থাকা টয়লেটের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক, অধিকাংশ দরজাই নষ্ট। বিভিন্ন সময়ে পানি থাকে না। এ কারণে বদনায় পানি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়। একই অবস্থা নগরীর জামালখান এলাকায় অবস্থিত টয়লেটে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে পাবলিক টয়লেট আছে মাত্র ২৭টি। এরমধ্যে ২০টি সিটি করপোরেশনের অধীনে। বাকি সাতটি এনজিও সংস্থা দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীনে। এ সাতটি পরিচালিত হচ্ছে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায়।
কোথায় আছে পাবলিক টয়লেট
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ জরুরি বিভাগ সংলগ্ন, বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার, সাগরিকা গরুর বাজার, ফিরিঙ্গি বাজার, বন্দরটিলা, অলংকার মোড়, পাহাড়তলী কাঁচাবাজার, নিমতলা, শেরশাহ কলোনি, দেওয়ানহাট পোর্ট সিটি, বায়েজিদ বোস্তামী, দেওয়ানহাট শপিং কমপ্লেক্স, রিয়াজুদ্দিন বাজার, বিআরটিসি বাসস্টেশন সংলগ্ন, কোর্ট বিল্ডিং সাবরেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন, বক্সিরহাট, পৌর জহুর হকার্স মার্কেট (মসজিদ সংলগ্ন), ঈদগাহ, লালদিঘি মসজিদ সংলগ্ন ও ফিশারিঘাট বাজার সংলগ্ন গণশৌচাগার।

কোথায় আছে পাবলিক টয়লেট
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ জরুরি বিভাগ সংলগ্ন, বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার, সাগরিকা গরুর বাজার, ফিরিঙ্গি বাজার, বন্দরটিলা, অলংকার মোড়, পাহাড়তলী কাঁচাবাজার, নিমতলা, শেরশাহ কলোনি, দেওয়ানহাট পোর্ট সিটি, বায়েজিদ বোস্তামী, দেওয়ানহাট শপিং কমপ্লেক্স, রিয়াজুদ্দিন বাজার, বিআরটিসি বাসস্টেশন সংলগ্ন, কোর্ট বিল্ডিং সাবরেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন, বক্সিরহাট, পৌর জহুর হকার্স মার্কেট (মসজিদ সংলগ্ন), ঈদগাহ, লালদিঘি মসজিদ সংলগ্ন ও ফিশারিঘাট বাজার সংলগ্ন গণশৌচাগার।
অপরদিকে, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় পরিচালিত সাতটি আধুনিক গণশৌচাগার হলো, কেসি দে রোড, লালদীঘির পাড়, অক্সিজেন মোড়, বিবিরহাট গরুর বাজার, বাকলিয়া নতুন ব্রিজ, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও ২নং গেট শেখ ফরিদ মার্কেট সংলগ্ন শৌচাগার। এগুলো আধুনিক গণশৌচাগার। এগুলো চসিক পরিচালিত গণশৌচাগারগুলোর চেয়ে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান এস্টেট কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট নেই। এখন ২০টির মতো পাবলিক টয়লেট সিটি করপোরেশন ইজারার মাধ্যমে পরিচালনা করছে। এরমধ্যে ৭টির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এগুলোর দরজা-জানালা ভাঙা, আবার অনেক টয়লেটের দরজায় হুক নেই। আছে পানির সমস্যাও। কোনোভাবে চলছে। এগুলো সংস্কারের জন্য ফাইল পাঠানো হয়েছে।'
সংস্কারের অপেক্ষায় থাকা ৭ পাবলিক টয়লেট হলো—বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার, শেরশাহ কলোনি, অলংকার মোড়, দেওয়ানহাট পোর্ট সিটি, ঈদগাহ, বিআরটিসি বাসস্টেশন সংলগ্ন গণশৌচাগার ও কর্নেল হাট গণশৌচাগার।
চসিক এস্টেট শাখা সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে চসিকের তত্ত্বাবধানে ৪৩টি গণশৌচাগার ছিল।
চসিক এস্টেট শাখা সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে চসিকের তত্ত্বাবধানে ৪৩টি গণশৌচাগার ছিল।
পরবর্তী সময়ে ভবন, সড়ক ও নালা নির্মাণের কারণেই ৬টি গণশৌচাগার ভাঙা হয়। অবশিষ্ট ৩৭টির মধ্যে সাতটি সংস্কারে বেসরকারি দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র (ডিএসকে), ওয়াটার এইড ও কিম্বার্লি ক্লার্কের সঙ্গে চুক্তি করে চসিক। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেসি দে রোড, লালদীঘির পাড়, অক্সিজেন মোড়, বিবির হাট গরুর বাজার, শাহ আমানত সংযোগ সড়ক, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও ২নং গেট শেখ ফরিদ মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় আধুনিক গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়। অপর ৩০টির মধ্যে ২০ সরাসরি পরিচালনা করছে চসিক। বাকি ১০টি বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং মল এলাকায় হওয়ায় সেগুলো মার্কেট কর্তৃপক্ষের আওতায় দিয়ে দেওয়া হয়।
বেসরকারিভাবে নগরীতে পিপিপি'র আওতায় সাতটি পাবলিক টয়লেট পরিচালনা করছে দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র (ডিএসকে)। সংস্থাটির স্যানিটাইজার কর্মকর্তা মাহমুদুল সাঈম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা নগরীতে সাতটি পাবলিক টয়লেট পরিচালনা করছি। এগুলোর মান অত্যন্ত ভালো। নারীদের জন্য পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় আরও একটি পাবলিক টয়লেট করার কথা হচ্ছে। টানেল চালু হওয়ার পর এটির কাজ শুরু করা হবে।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক পীরজাদা মো. মহরম হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'চট্টগ্রাম মহানগরীতে যত পাবলিক টয়লেট আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। নগরীতে ৪১টি ওয়ার্ড আছে। প্রতি ওয়ার্ডে দুটি করে পাবলিক টয়লেট থাকলে ৮২টি থাকার কথা। আছে মাত্র ২৭টি। নগরীতে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের বসবাস। তার ওপর প্রতিদিন ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কাজে আরও হাজার হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করে। পর্যাপ্ত গণশৌচাগার না থাকায় নগরবাসীকে নানা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয়।