রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা মোকাররম হোসেন সুজন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল আমিনকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
জানা গেছে, বুধবার (২৯ মে) ষষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ হাজার ৪১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত এ নেতা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুহুল আমিন কাপ-পিরিচ প্রতীকে পেয়েছেন ২৮ হাজার ২০৮ ভোট। অপরদিকে বিএনপির আরেক বহিষ্কৃত নেতা কামরুজ্জামান লিপটন আনারস প্রতীক নিয়ে ১৭ হাজার ১০৮ ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়।
এদিকে সাবেক বিএনপি নেতা সুজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় গঙ্গাচড়া উপজেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এককালে জাপার দুর্গ এখন আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি গঙ্গাচড়ায় কোন ম্যাজিকে তিনি জয়ী হলেন তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে সুজন ও লিপটনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সুজনের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ট্রিবিউনকে মোকাররম হোসেন সুজন জানান, তিনি গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের কয়েকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান (ইউপি) ছিলেন। এবার উপজেলা নির্বাচন করবেন বলে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছেন।
জয়লাভের ম্যাজিক কী ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় গঙ্গাচড়াজুড়ে প্রচার-প্রচারণায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। দলমত নির্বিশেষে সকলের সমর্থন ও দোয়ার কারণে বিজয়ী হয়েছি।’
বহিষ্কারের বিষয়ে সাবেক এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিএনপি প্রার্থী হিসেবে তো নির্বাচন করিনি, দলও নির্বাচনে অংশ নেয়নি। দল থেকে বহিষ্কারের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য নেই। তবে জনগণের জন্য যদি রাজনীতি হয় তাহলে তাদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়।’
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সুজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওয়াহিদুজ্জামান মাবুর সঙ্গে শুক্রবার (৩১ মে) সকালে যোগাযোগ করা হয়। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন করায় দল তাকে (সুজন) বহিষ্কার করেছে। এখন তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এতে আমার বা বিএনপির কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে আজীবনের জন্য। বিএনপিতে তার কোনও স্থান নেই।’