চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন’ বিশ্লেষণ করেছে, ‘উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। তবে আওয়ামী লীগের এই কৌশলের কারণেই উপজেলা নির্বাচন অনেকাংশে নির্দলীয় নির্বাচনের পরিচিতি পেয়েছে। কেননা জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির থেকে নগণ্য সংখ্যক দলীয় প্রার্থী ছাড়া প্রায় সবাই স্বতন্ত্রভাবে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বা করছেন।’
মঙ্গলবার (৪ জুন) ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হলফনামার বিভিন্ন তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরে একটি অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন সুজন প্রধান কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
লিখিত বক্তব্যে দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক দলভিত্তিকভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনেকটা নির্দলীয় অবয়ব পেয়েছে। কেননা ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। দলীয় কৌশলের কারণে দলটির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।’
তবে আওয়ামী লীগ কেন দলীয় প্রতীক ছাড়া এই নির্বাচন করছে, প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হয় যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আগে থেকেই ভেবেছিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ তাদের সমমনা দলগুলো এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না। সেক্ষেত্রে ভোট পড়ার হার কম হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই অধিক সংখ্যক প্রার্থী যেন নির্বাচনে অংশ নেয়; প্রার্থী বেশি থাকার কারণে ভোট যেন বেশি পড়ে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আগ্রহী নেতারা যেন স্বতন্ত্র পরিচয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়, নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে স্থানীয় পর্যায়ের দলীয় বিভাজন যেন দৃষ্টিকটুভাবে দৃশ্যমান না হয় ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কৌশল নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ উপজেলাতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। অনেকেই মনে করেন জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগে দল মনোনীত ও দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে যে বিভাজন দেখা দিয়েছিল, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তা স্থায়িত্ব লাভ করবে। এই পরিস্থিতিতে আচরণবিধি ভঙ্গসহ সহিংসতার ঘটনাও ঘটছে।
সুজনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ড. হামিদা হোসেনের সভাপতিত্বে ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও সুজন কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ প্রমুখ।