সাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এ পরিণত হয়েছে। এটি উপকূল থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় মোংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই ঝড় আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাড়তে পারে সংকেতও। এদিকে ঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার চর এবং নিম্নাঞ্চলে ৩ থেকে ৫ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় "রিমাল”-এ পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। মধ্যরাতে (২৫ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (২৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো।
এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর সন্ধ্যার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগের বা সামনের অংশের প্রভাব রবিবার সকাল থেকেই পাওয়া যেতে পারে বলে জানালেও শনিবার রাত থেকে উপকূলীয় অনেক এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে এই বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, ‘রিমাল’ একটি আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ বালু। নামটি দিয়েছে ওমান।
সরাসরি ঘূর্ণিঝড় রিমালে'র অবস্থান দেখতে ও তথ্য পেতে দেখুন:
আরও পড়ুন:
- ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় কক্সবাজারে ব্যাপক প্রস্তুতি
- চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-৩ জারি, বন্ধ আছে জাহাজের পণ্য খালাস
- ‘রিমাল’ আতঙ্ক: সুন্দরবনের কর্মকর্তা-বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল
- ঘূর্ণিঝড় রেমালসেন্টমার্টিনে পানি বৃদ্ধি, আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং
- বরগুনায় নেমেছে বৃষ্টি, প্রস্তুত ৬৭৩ আশ্রয়কেন্দ্র
- ৫১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, খুলনা উপকূলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা
- মোংলা-পায়রায় ৭ নম্বর সংকেত, উপকূল থেকে কত দূরে ঘূর্ণিঝড় রিমাল?
- ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্বাস্থ্য অধিদফতরের
- ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় প্রস্তুত ফায়ার সার্ভিস, ছুটি বাতিল
- চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছাড়তে মাইকিং, খোলা হলো কন্ট্রোল রুম
- ঘূর্ণিঝড় রিমাল: পটুয়াখালীতে প্রস্তুত ১৭৭ আশ্রয়কেন্দ্র, সতর্ক থাকতে মাইকিং
- আবহাওয়া রাতে বিপদের পর্যায়ে যেতে পারে, প্রস্তুত ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র: প্রতিমন্ত্রী
- নিম্নচাপ উপকূল থেকে ৪২৫ কিমি দূরে, ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত