খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকালে তিন দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিকাল সোয়া ৩টার দিকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা গল্লামারী এলাকায় পৌঁছেন। সে সময় জিরোপয়েন্টের দিকে থেকে পুলিশ মিছিল লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ছোড়ে। এর পর পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
বিকাল ৪টার দিকে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ হয়। জিরোপয়েন্ট মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। আর রূপসা সেতু বাইপাসের দুই পাশে অবস্থান নেয় পুলিশ। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পুলিশ একাধিক টিয়ালশেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
খুলনা মহানগরীর হরিনটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সঞ্জীব কুমার ঘোষ বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের পর এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দু’দফা পুলিশ হামলা চালালে তারা রাজপথে নেমে আসেন। তারা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এর ফলে পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ সময় পুলিশ আটক করা দুই ছাত্রকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। সংঘর্ষে ১০ জন ছাত্র আহত হয়। দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আট জনকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ সময় পুলিশের বাধা অতিক্রম করে ছাত্র-শিক্ষক-জনতার প্রতিবাদী গানের অনুষ্ঠান চলে। এরপর বিকাল ৫টা ৩৯ মিনিটে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শিববাড়ি মোড়ের দিকে রওনা হন। সেখানে গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের তৃতীয় দফায় সংঘর্ষ হচ্ছে৷ এ সময় পুলিশ মিছিলে বাধা দিলে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। এ অবস্থায় মুহুর্মুহু টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এতে পুরো গল্লামারী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
এর আগে শুক্রবার দুপুর ২টায় খুলনা নিউ মার্কেট এলাকা থেকে বৃষ্টির মধ্যে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা গণমিছিল শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা মিছিলটি নিয়ে গল্লামারী মোড়ে পৌঁছান। এরপরই পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে আরও শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে এগিয়ে এলে পুলিশ পিছু হটে। পরে শিক্ষার্থীরা জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আবারও সংঘর্ষ হয়।