বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) চার চিকিৎসককে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষকের বদলির দাবিতে দেওয়া আবেদনপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
একই সঙ্গে ছয় শিক্ষার্থীর ইন্টার্নশিপ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের পরিচালক ও কলেজের অধ্যক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেন।
বদলির সুপারিশকৃত চিকিৎসকরা হলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) জেলা সভাপতি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. জি এম নাজিমুল হক, সহকারী অধ্যাপক ডা. সৌরভ সুতার, স্বাচিপ বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুদীপ কুমার হালদার, স্বাচিপের জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবাসিক সার্জন ডা. মাসরেফুল ইসলাম সৈকত, মেডিক্যাল অফিসার শিরিণ সাবিহা তন্নী ও ইন্টারনাল মেডিক্যাল অফিসার এ এস এম সায়েম।
ইন্টার্নশিপ স্থগিতরা হলেন সাদমান বাকির সাবাব, মহসীন বিভা, আরিফুজ্জামান ইমন, প্রীতম দেবনাথ, অর্ঘ্য বিশ্বাস ও আসিফুল ইসলাম। এরা সকলে ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং আওয়ামীপন্থি বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ছিলেন।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতাকারী হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের দায়িত্বরত ছয় চিকিৎসক এবং ছয় ইন্টার্ন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে স্লোগানে ফেটে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল ও কলেজ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে তাদের দাবি-সংবলিত স্মারকলিপি হাসপাতালের পরিচালক ও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে প্রেরণ করেন।
বিক্ষোভে থাকা তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘অভিযুক্তরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি হাসপাতালে আসা আহত ছাত্রদের চিকিৎসা থেকেও তারা বিরত থেকেছেন। তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এর আগে অভিযুক্তরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তালিকা তৈরি করে তা গোয়েন্দা সংস্থায় প্রেরণ করেন। এসব কারণে তাদের কলেজ ও হাসপাতাল ক্যাম্পাসে আজীবন নিষিদ্ধ এবং অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের তালিকা সরকার থেকে শুরু করে দুই দফতরের প্রধানকে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক চার জনকে অন্যত্র বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। কলেজ অধ্যক্ষ দুই শিক্ষকের বিষয়ে প্রদানকৃত আবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছেন।’
হাসপাতালের পরিচালক এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চার চিকিৎসককে অন্যত্র বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। একই সাথে ছয় জনের ইন্টার্নশিপ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়।’
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা দুই জন শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। তাদের তালিকা দিয়ে একটি আবেদন প্রদান করেন। ওই আবেদনের কপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।’