X
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪
৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বাংলা ট্রিবিউনকে ডিএমপি কমিশনার

ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কর্মসূচি বৈধ নয়

রিয়াদ তালুকদার 
২৯ জুলাই ২০২৩, ১৯:৫৭আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৩, ২০:০৬

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি না নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয় বিএনপি এবং দলটির সঙ্গে যুগপতে যুক্ত বিরোধী দলগুলো। এ অবস্থায় পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকতে বলার পরও সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। আজ শনিবার (২৯ জুলাই) একদিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, অন্যদিকে আবার যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ডিএমপি বলছে, ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত যেভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ এবং যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছিল, আজ ঠিক তারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে।

তবে পুলিশের ওপর হামলা, যানবাহনে আগুন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে কেউ ছাড় পাবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অতীতেও কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি, ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না। অনুমতি ছাড়া সভা-সমাবেশ আইনত বেআইনি হিসেবে গণ্য হয়। এই বেআইনি সভা-সমাবেশ বা অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা কিংবা যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা অপরাধের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারার উসকানি হিসেবেও দেখছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

আজ সকালে রাজধানীর প্রবেশমুখ যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া, মাতুয়াইল ও ধোলাইখাল, অন্যদিকে রাজধানীর গাবতলী ও উত্তরায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত ডিএমপির সদস্যরা

বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে উদ্দেশ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। পুলিশ টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেট ছুড়েছে। পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ চলাকালে মাতুয়াইল এলাকায় তিনটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়াও শ্যামলী এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এসব সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যরা যেমন আহত হন, সেই সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীরাও আহত হয়ে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান।

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, আমরা সড়কে অবস্থান নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের দাঁড়াতে দেয়নি। আমরা কোনও সন্ত্রাসের জন্য আসিনি, একটি দাবি নিয়ে এসেছি। আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হোক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হোক; এটা রাষ্ট্রবিরোধী নয়। বিগত দিনে নির্বাচনগুলো হয়েছিল প্রহসনের। আমরা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি। 

অন্যদিকে ডিএমপির কর্মকর্তারা বলছেন, অনুমতি না নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি করতে জড়ো হয়েছেন; যা একদিকে যেমন অপরাধ করেছে, আবার পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়েছে—যা খুবই দুঃখজনক। পুলিশকে লক্ষ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার এ বিষয়টি ২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাসের এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাকে মনে করিয়ে দেয়। এ হামলার পেছনে অন্য কারও যোগসাজশ রয়েছে কিনা; তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড করলে ভবিষ্যতে যেকোনও কর্মসূচির বিষয়ে আরও কঠোর হবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করা হচ্ছে। শনিবার (২৯ জুলাই) বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে, যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানিয়েছেন ডিএমপির কর্মকর্তারা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ শনিবার (২৯ জুলাই) বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির কোনও অনুমতি দেয়নি ডিএমপি। তারা বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং যানবাহনে আগুন দিয়েছে। এর আগেও ২০১৩-১৪ সালে পুলিশের ওপর হামলা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল জামায়াত-বিএনপি। আজকের ঘটনা তারই পুনরাবৃত্তি হিসেবে আমরা মনে করি।’

রাজধানীর শ্যামলীতে ভাঙচুরের শিকার পুলিশের গাড়ি

একইরকম মন্তব্য করেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ অনুমতি না থাকার পরও বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়েছিল; যা আইনত নয়। একপর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং যানবাহনে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। আজকের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তবে আমরা আগামী দিনগুলোতে সংঘাতের পথ ছেড়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করবে বিএনপি; এমনটাই আশা রাখি। আগামী দিনগুলোতে কর্মসূচি পালনের পর বোঝা যাবে আসলেই তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চায় কিনা।’

দুই রাজনৈতিক দলের প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান করার কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে; এমন তথ্য থাকায় কাউকেই অবস্থান করার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান করে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার একটি পরিকল্পনা নিয়েছিল; যা আইনসঙ্গত নয়। যখন কোথাও কোনও ধরনের আশঙ্কার তথ্য থাকে, তখন আমরা সেসব বিষয় বিবেচনা করে অনুমতি দেই না। গতকাল শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পৃথক জায়গায় সমাবেশ করেছে; তার নিরাপত্তার জন্য ডিএমপি কাজ করেছে।’

/ইউএস/এমওএফ/
টাইমলাইন: আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ
২৯ জুলাই ২০২৩, ১৯:৫৭
ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কর্মসূচি বৈধ নয়
২৯ জুলাই ২০২৩, ১৩:৪৮
২৮ জুলাই ২০২৩, ১৭:০৬
২৮ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪০
সম্পর্কিত
ঋণখেলাপি-অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রকাশের দাবিতে গণসংহতির আল্টিমেটাম
এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা চান মেয়র তাপস
ব্যাটারিচালিত যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্সসহ চার দাবি
সর্বশেষ খবর
রাইসির মৃত্যুতে উল্টে গেছে পাশার দান, আলোচনায় খামেনির ছেলে
রাইসির মৃত্যুতে উল্টে গেছে পাশার দান, আলোচনায় খামেনির ছেলে
কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে অপসারণে মন্ত্রণালয়ের আহ্বান
কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে অপসারণে মন্ত্রণালয়ের আহ্বান
‘বাংলাদেশে মত প্রকাশের অধিকার সংকটজনক পরিস্থিতেই রয়েছে’
‘বাংলাদেশে মত প্রকাশের অধিকার সংকটজনক পরিস্থিতেই রয়েছে’
বারবার কেন বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার?
বারবার কেন বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার?
সর্বাধিক পঠিত
১০০ লিচু ১০০০ টাকা, তবু দুশ্চিন্তায় এই গ্রামের চাষিরা
১০০ লিচু ১০০০ টাকা, তবু দুশ্চিন্তায় এই গ্রামের চাষিরা
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
সংসদীয় কমিটির তোপের মুখে টেলিটক
সংসদীয় কমিটির তোপের মুখে টেলিটক
সহিংসতার দুটি মামলা থেকে খালাস পেলেন ইমরান খান
সহিংসতার দুটি মামলা থেকে খালাস পেলেন ইমরান খান
ভোটারের অপেক্ষায় কুমিল্লার একটি কেন্দ্র
ভোটারের অপেক্ষায় কুমিল্লার একটি কেন্দ্র