X
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
৭ আষাঢ় ১৪৩২

সাংবাদিকদের ওপর কেন এই ক্ষোভ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৪ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৪৯আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৪, ২০:০০

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় এখন পর্যন্ত চার সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত আড়াইশ জন। রবিবার (৪ আগস্ট) আন্দোলনকারীদের ডাকা অসহযোগের প্রথম দিন আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ সাংবাদিক। আন্দোলনস্থলে কয়েকটি গণমাধ্যম ছাড়া বাকিদের পরিচয় পেলেই নানাভাবে হেনস্তার অভিযোগ আছে। প্রশ্ন উঠেছে, কেন কর্তব্যরত সাংবাদিকদের ওপর এই ক্ষোভ। পেশাগত দায়িত্ব পালনে যদি ভিন্নমতের গণমাধ্যমও উপস্থিত থাকে, সেখানে এ ধরনের হামলা কতটা গ্রহণযোগ্য। গণমাধ্যমসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজব উৎপত্তি ও তার সঙ্গে গণমাধ্যমকে গুলিয়ে ফেলার কারণে এ ধরনের পরিস্থিতি উদ্ভুত হয়েছে। মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজবকে বিশ্বাস করে নিয়ে সেভাবেই গণমাধ্যমে খবর দেখতে চান।

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল থেকে প্রথম আলোর রাজশাহীর আলোকচিত্রী শহীদুল ইসলামসহ তিন সংবাদকর্মীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় আলোকচিত্রীর ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ছবি মুছতে বাধ্য করা হয়। শনিবার দুপুরে নগরের কামারুজ্জামান চত্বরে রেলগেটে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে বেলা ১১টার দিকে মিছিল বের করা হয়। বেলা ১টার দিকে মিছিলটি নগরের কামারুজ্জামান চত্বরে আসে। চত্বরের পাশে রেলগেটের ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন আলোকচিত্রী শহীদুল ইসলাম। তখন মিছিল থেকে কয়েকজন এসে তাকে ঘিরে ধরে ‘ছবি ডিলিট কর, ক্যামেরা দে’ বলতে থাকেন। শহিদুল ইসলাম তখন ছবি মুছতে গেলে তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। মাথায় হেলমেট থাকায় তিনি রক্ষা পান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলের সংবাদ সংগ্রহের সময় কুমিল্লায় খোকন চৌধুরীর নামের এক সাংবাদিক ও মেরাজ হোসেন নামের এক ভিডিও সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইনস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রবিবার মাঠে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন পরিস্থিতির কথা জানা যায়। এক ফটোসাংবাদিক জানান, রাস্তায় আন্দোলনকারী, সরকার দলীয়রা ও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী সবাই চার্জ করে। কেউই পক্ষে না। সবাই কেন বিরোধী সে প্রশ্ন নিয়ে পালিয়ে পালিয়ে তথ্য সংগ্রহ করলাম।

দায়িত্ব পালনকালে সড়কে আক্রমণের শিকার হন এক নারী সাংবাদিক। তার ঘাড় ধরে ‘ওরে আজ বানামু’ বলে আটকে রাখে। পরে ভিড়ের মধ্যে থাকা দুই জনের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তার সঙ্গে থাকা সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করতে উদ্যত হয়।

শাহবাগে একদল ফটোজার্নালিস্টকে ধাওয়া দিয়ে তাদের ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়। এই সময় তিনটি টেলিভিশনের নাম করে সাংবাদিক খোঁজা হয়।

সব পক্ষের এই ক্ষোভের কারণ কী জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘এটা সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ঘৃণার ফল। একটা গ্রুপ বিদেশে বসে লাগাতার মিডিয়ার বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়েছে। দেশের ভেতর থাকা একটা গ্রুপও এ কাজ করেছে। তাদের কথা শুনলে মনে হয় সব সমস্যার সমাধান দেয় গণমাধ্যম। বাস্তব তো তা নয়। সাংবাদিকরা কাজ করে একটা সিস্টেমে। সামাজিক মাধ্যমে তারা যা লিখে বলে মনে করে সাংবাদিকদেরও তাই করতে হবে। মিডিয়ার রাজনৈতিক মালিকানাও এর জন্য কিছুটা দায়ী।’

গণমাধ্যমে কেউ কেউ রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার কারণে সাধারণ ও মাঠের সাংবাদিকদের ক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয়, আক্রমণের শিকার হয় বলে মনে করেন সাংবাদিক নেতা সাখাওয়াত হোসেন বাদশা। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে সাংবাদিক নেতাদের মাঠে নেমে সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত এবং সাংবাদিকরা যাতে নির্ভয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেই বিষয়ে সহযোগিতা করা দরকার।’

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জায়েদুল আহসান পিন্টু তার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় রিউমার প্রডিউসাররা যে হারে গুজব ছড়াচ্ছে তাতে সত্যি মিথ্যা একাকার হয়ে গেছে। তাই আন্দোলনকারীরা মনে করছে গণমাধ্যম সঠিক খবর দিচ্ছে না। তাই তারা গণমাধম্যকে প্রতিপক্ষ ভাবছে।’

/ইউআই/আরআইজে/
টাইমলাইন: কোটা আন্দোলন
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০০
০৫ আগস্ট ২০২৪, ১৫:২২
০৪ আগস্ট ২০২৪, ২১:৩৭
সম্পর্কিত
সাংবা‌দিক মামুন রেজার মৃত্যু
ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়ার সময় ছাত্রদল ও শিবিরের সংঘর্ষ
তালা ভেঙে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব দখলে নেওয়ার হুঙ্কার বিএনপি নেতার
সর্বশেষ খবর
‘রাজনীতি না করেও’ পদ পাওয়া সেই নেতাকে ছাত্রদল থেকে অব্যাহতি
‘রাজনীতি না করেও’ পদ পাওয়া সেই নেতাকে ছাত্রদল থেকে অব্যাহতি
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার কারাগারে
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার কারাগারে
‘শিশুশ্রম থাকলে অর্থনৈতিক নৈতিকতা থাকে না’
‘শিশুশ্রম থাকলে অর্থনৈতিক নৈতিকতা থাকে না’
এনসিপির কমিটিতে যুবলীগ নেতা
এনসিপির কমিটিতে যুবলীগ নেতা
সর্বাধিক পঠিত
ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়ার সময় ছাত্রদল ও শিবিরের সংঘর্ষ
ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়ার সময় ছাত্রদল ও শিবিরের সংঘর্ষ
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র, মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট মানছেন না ট্রাম্প
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র, মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট মানছেন না ট্রাম্প
ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন মোদি, জানালেন কারণ
ট্রাম্পের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন মোদি, জানালেন কারণ
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার আটক
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার আটক
থানায় থাকা ট্রাঙ্কের তালা খুলে বের করা হয় এইচএসসির প্রশ্নপত্র
থানায় থাকা ট্রাঙ্কের তালা খুলে বের করা হয় এইচএসসির প্রশ্নপত্র