কোটা রাখা না রাখার বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চান না শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা সঠিক হবে না। মন্ত্রী পেনশন নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলন বিষয়েও কথা বলতে রাজি হননি।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) রাজধানী ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পোর্টাল বিষয়ভিত্তিক অনলাইন প্রশিক্ষণ ও নৈপুণ্য অ্যাপ ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নিজের অবস্থান জানান শিক্ষামন্ত্রী।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, সর্বোচ্চ আদালতে আগামীকাল (বুধবার) একটি শুনানি হবে, সেখানে একটি সিদ্ধান্ত আসবে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করাটা সঠিক হবে না।
তিনি আরও বলেন, কোটা তুলে দেওয়ার পর চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু জেলা একেবারেই পিছিয়ে ছিল। নারীদের ক্ষেত্রে ৫০টি জেলা থেকে কোনও ধরনের অংশগ্রহণ ছিল না। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সেখান থেকেও সম্ভব হয়নি। কোটা তুলে দেওয়ার কারণেই সেটা হয়েছে। আর অনেকেই সেটা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। আসলে কিছু কিছু বিষয় রাজপথে সমাধান সম্ভব না। যেহেতু পক্ষভুক্ত হয়েছে (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী), আশা করছি একটি নির্দেশনা আসবে। কিছু কিছু বিষয় রাজপথে সমাধান সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। সেই অঙ্গীকার সরকার যথাযথভাবে পূরণ করবে।
কোটা সংস্কার চাচ্ছেন কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমার নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান সব জনগোষ্ঠী, সব জেলা যাতে করে সমান সুযোগ পায়, অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন যাতে সম্ভব হয়, সেটাই তো তার পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। দেখা যাক সেটা কীভাবে নির্বাহী বিভাগ করে।
শিক্ষক আন্দোলন নিয়েও কথা বলবেন না মন্ত্রী
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আন্দোলন নিয়েও কথা বলতে চান না শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, যেটি সরকারের সর্বজনীন একটি সিদ্ধান্ত সেটার বিষয়ে আলাদা করে মন্ত্রণালয় বা শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমি মন্তব্য করবো না।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের আজকের যে বেতন-ভাতা তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। আমি আবারও বলবো আস্থাশীল থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সব সময় বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন (শিক্ষায়), এই বিনিয়োগ এখন পর্যন্ত যা বেড়েছে, আগামীতেও বাড়বে। শিক্ষকদের সম্মানী ও প্রাপ্য বাড়তে থাকবে।
তিনি বলেন, ১ জুলাইয়ের পর থেকে যে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবেন, স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যারা যোগদান করবেন, সে বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা আছে। মন্ত্রণালয়ের যে নির্দশনা সেটা সরকারের সার্বিক একটি নির্দেশনা। যেহেতু শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারের একটি অংশ, সেখানে সরকারের সার্বিক নির্দেশনা, সেটার বিষয়ে আলাদা করে মন্তব্য করবো না আমি। সেটি সরকারের সার্বিক ও নীতিনির্ধারণী বিষয়। শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমি মন্ত্রিপরিষদের একজন সদস্য। যেটি সর্বজনীন একটি সিদ্ধান্ত, সেটার বিষয়ে আলাদা করে মন্ত্রণালয় বা শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমার বক্তব্য নেই।
মূল্যায়নের উত্তর সোশাল মিডিয়ায়
স্কুল শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন নির্দেশনার উত্তর সোশাল মিডিয়ায় মূল্যায়নের আগের রাতে আসছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বলেছি যে সমাধান দিয়ে দিলেই যে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা মূল্যায়ন করতে পারবো না তা নয়। সমাধান দিয়ে দেওয়ার মধ্যে মার্ক পেয়ে যাওয়ার কোনও বিষয় নেই। অনেক ক্ষেত্রেই ওপেন বুক টেস্ট। আমরা চাচ্ছি, প্রশ্নবিদ্ধ না হোক। প্রশ্নবিদ্ধ না হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে এই কাজ না করে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুননাহার, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. মো. ফরিদ আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এবং সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।