স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরি বিধিমালা প্রণয়নের দাবি না মানলে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে ‘কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি’ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে করা ওই প্রতিবেদন ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে মনে করছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ। একই কথা বলছেন, সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ কেউ।
দাবি মেনে না নিলে মেট্রোরেল সেবা বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারির খবর পাওয়ার পর এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ডিএমটিসিএল-এর সরাসরি উন্মুক্ত নিয়োগের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এই প্রতিবেদক।
এসময় পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, চাকরির বিধিমালা প্রণয়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। এনি য়ে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ দুদিন ধরে আলোচনায় বসছেন। তারা প্রত্যাশা করছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এর সমাধান হবে।
তবে কর্মবিরতির ঘোষণার বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না কেউই। তারা ধারণা, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই কেউ কেউ হয়তো এমন কর্মসূচি চাইছেন।
এবিষয়ে ডিএমটিসিএল-এর এমডি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের একটা দাবি ছিল চাকরির বিধিমালা প্রণয়নের। সেটি নিয়ে গতকাল (সোমবার) ও আজ আমরা আলোচনায় বসেছি। তারা তাদের মতামত তুলে ধরেছেন। কিন্তু বৈঠকে অংশ নেওয়া তাদের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে কেউ কর্মবিরতির আল্টিমেটামের বিষয়ে আমাকে কিছু বলেননি। আমরা এমন কিছু প্রত্যাশা করি না।’
ডিএমটিসিএল’র কর্মীরা জানান, ২০১৩ সালের ৩ জুন কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এক যুগ পার হলেও এখনও চাকরিবিধি প্রণয়ন করেনি ডিএমটিসিএল। এতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৈষম্য, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিশ্চয়তার শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। সেইসঙ্গে পূর্ণাঙ্গ প্রাতিষ্ঠানিক বিধিবিধান না থাকায় যাত্রীসেবার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও দাবি তাদের।
তারা আরও জানান, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা স্বয়ংসম্পূর্ণ চাকরিবিধি প্রণয়নের নির্দেশনা দেন। তবে ৫ মাস অতিবাহিত হলেও, রহস্যজনক কারণে তা এখনও প্রণীত হয়নি।
ডিএমটিসিএল কর্মীদের দাবি, চাকরিবিধি না থাকায় প্রতিষ্ঠানটির ২০০ জনেরও বেশি দেশি ও বিদেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে মেট্রোরেল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।