কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি দেখে পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি ও দলটির সঙ্গে সরকার পতনের আন্দোলনে যুক্ত বিরোধী দলগুলো।
বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যার পর দলের নীতিনির্ধারকেরা বৈঠকে মিলিত হবেন। সে বৈঠকে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি।
দলের স্থায়ী কমিটি ও একাধিক প্রভাবশালী দায়িত্বশীলের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে আজ বুধবার দুপুরে বায়তুল মোকাররমে গায়েবানা জানাজা পড়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিষয়টি সরকার নিজেরা সমাধান করতে পারতো। কিন্তু পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদে কর্মসূচি দেবো।’
দলীয় নেতারা বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে উল্লেখ করেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়েছে। তবে নতুন করে গত দুই দিনে আন্দোলনকারীদের ছয়জনের মৃত্যু; শতাধিক আহত এবং সর্বশেষ আজ বুধবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনায় রাজনৈতিকভাবে কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি।
গত দুইদিনের পরিস্থিতিতে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের অনেকেই সরকার পতনের সম্ভাবনাকে সামনে এনে কর্মসূচি প্রণয়নের কথা আলোচনা করছেন। যদিও দলীয় হাইকমান্ডে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে ভিন্ন চিন্তা— বলছেন দলটির সঙ্গে যুগপতে যুক্ত একাধিক নেতা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) মধ্যরাতে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে গণতন্ত্র মঞ্চের একজন নেতা বলেন, ‘বিকালের বৈঠকে বিএনপিকে মঞ্চের একজন হরতাল দেওয়ার কথা প্রস্তাব করেছিলেন। তাতে অবশ্য বিএনপির তেমন সাড়া মেলেনি।’
দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহযোগিতা করবে নাকি ব্যবহার করবে, এটা বিবেচ্য প্রসঙ্গ। এক্ষেত্রে যদি সুবিধা নেওয়ার জন্য কর্মসূচি দেয়, তাহলে একরকম।
গণতন্ত্র মঞ্চের একাধিক নেতা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি দিলে তাতে নৈতিক সমর্থন ও প্রয়োজনে রাজপথে নিয়মিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হবে। এক্ষেত্রে সমর্থন জানিয়ে নাগরিক সমাবেশও হতে পারে।
বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা দাবি করেন, বৃহস্পতিবার সারাদেশে যুগপৎ বিক্ষোভের ঘোষণা আসতে পারে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আন্দোলনে যুক্ত একটি ছাত্র সংগঠনের অন্যতম শীর্ষ নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত কোনও কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়নি।’ এ প্রতিবেদন লেখার সময় (ছয়টা ত্রিশ মিনিট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছিল।
তবে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে একটি গোয়েন্দা সূত্র দাবি করেছে, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) প্রোগ্রাম দিতে পারে। এক্ষেত্রে অবরোধ, নাকি হরতাল, তা স্পষ্ট হয়নি।’
জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা সাইফুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হলে জানাতে পারবো।’