মোংলায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর, নির্যাতন ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হুমকির অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর কাছে শোচনীয় পরাজয়ের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসামাল হয়ে এসব করছেন বলে দাবি করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এ বিষয়ে প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় মোংলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। বাগেরহাট-৩ (রামপাল -মোংলা) আসনে নৌকার প্রার্থী বেগম হাবিবুন নাহারের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইদ্রিস আলী ইজারাদার। নির্বাচনে তিনি প্রায় ২৭ হাজার ভোটে পরাজিত হন।
ভোটে হেরে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক ছাড়াও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর ইদ্রিস আলীর কর্মী বাহিনী হামলা চালিয়ে আসছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন আওয়ামী লীগের উপজেলা ও পৌর কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষে সুন্দরবন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন শেখ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের কর্মী বাহিনীর হামলায় নৌকা প্রতীকের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নৌকায় ভোট দেওয়ায় সংখ্যালঘুদের ভিটেমাটি ছাড়া করে ভারতে পাঠানোর হুমকি-ধমকি দেখিয়ে আসছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী বাহিনীরা। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনী পুরো মোংলা এলাকাজুড়ে যে হামলা, ভাঙচুর ও নির্যাতনসহ তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন তা বিগত সময়ের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।’
‘এখন তারা তাদের এহেন কর্মকাণ্ড আড়াল করতে ও নৌকার নেতাকর্মীদের ওপর এর দায় চাপাতে নানা ধরনের অপপ্রচার এবং অপচেষ্টা লিপ্ত হয়েছেন। তাই নৌকা জেতায় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পরাজয়ের আক্রোশে তারা এখন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের জড়িয়ে ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভেদসহ সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক বিনষ্টে গত শনিবার ঢাকায় কতিপয় লোকজনকে ভাড়া করে একটি সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন। মূলত নৌকার নেতাদের রাজনৈতিকভাবে হয়রানি ও হেয়প্রতিপন্নের উদ্দেশে তা করা হয়েছে।’ যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শেখ আব্দুস সালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জসিম, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ইস্রাফিল হাওলাদারসহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের বিপুলসংখ্যক লোকজন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ইদ্রিস আলী ইজারাদার বলেন, আমার এবং আমার কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তা শতভাগ মিথ্যা। আপনারা (সাংবাদিকরা) তদন্ত করে দেখেন কোনও সত্যতা মিলবে না। আর আমার কর্মীরা নৌকার কর্মীদের ভয়ে ঘরছাড়া। তারা কীভাবে হামলা করবে?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা রামপালের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন, ‘দুই পক্ষেরই একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলা হয়েছে এবং আসামিও গ্রেফতার হয়েছে। আমরা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।’