সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র নিহতের ঘটনায় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে সহিংসতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভাঙচুর চালানো হয়েছে পাঁচটি আঞ্চলিক অফিসে। এতে ৫০টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলাসহ মোট ৬৭টি গাড়ি ক্ষতি করা হয়েছে। ফলে রাজধানীর বর্জ্য নিরসন ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হচ্ছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে মিরপুর-১০ এ সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনসিসির আঞ্চলিক অফিস পরিদর্শনকালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বর্জ্যবাহী ২৯টি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত করে দিয়েছে, অফিসারদের ব্যবহারের ২১টি পাজেরো জিপ পুড়ে দিয়েছে। এছাড়া আরও ১৭টি গাড়ি ভেঙে দিয়েছে। আমাদের বর্জ্য পরিবহনের মোট যানবাহনের চারভাগের একভাগ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। মিরপুর-১০ নম্বর ফুটওভার ব্রিজ অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার ও মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টার সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলো জনগণের সম্পদ। সন্ত্রাসীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনকে ব্যবহার করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করেছে।
মেয়র বলেন, সন্ত্রাসীরা রামপুরায় পাম্প হাউজে হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করেছে, এমনকি পাম্প হাউজ মেরামতের উদ্দেশ্যে আমাদের কর্মীরা সেখানে গেলে তাদের ওপরেও আক্রমণ করেছে সন্ত্রাসীরা। আমরা স্ট্রিট লাইট মেরামতের জন্য অত্যাধুনিক ল্যাডার এনেছিলাম। সেই ল্যাডারগুলোও তারা ধ্বংস করেছে। ফুটপাত ও সড়ক ভিভাজকে আমরা অনেক বৃক্ষরোপণ করেছিলাম। তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে যে গাছ লাগিয়েছিলাম, সেই গাছগুলোও তারা ধ্বংস করেছে।
সহিংসতায় ডিএনসিসির মোট ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য কাজ করছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা যে হিসাব করেছি, ডিএনসিসির অন্তত ২০৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন জনগণের সেবা যেন ব্যাহত না হয়। আমরা কর্মঘণ্টা বাড়িয়ে, গাড়ির ট্রিপ বাড়িয়ে বর্জ্য অপসারণ করেছি। ইতোমধ্যে প্রগতি সরণি, বাড্ডা, রামপুরা, মহাখালী, উত্তরা, মিরপুরসহ সব সড়কের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। জনগণের সহযোগিতা চাই। আমরা দ্রুত সময়ে সব সেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এ সময় ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।