তালেবানের ভয়ে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে যেতে বাধ্য হয়েছেন অনেক আফগান সংগীত শিল্পী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৬ আফগান শিল্পী নিজেদের উৎকণ্ঠার কথা জানান। তারা এখন পাকিস্তানে আত্মগোপনে আছেন।
এদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আফগানিস্তানে থেকে গেলে তাকে হত্যা করা হতো। না চাইলেও পালাতে হয়েছে। আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর সংগীতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তালেবান। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত শাসনামলের সময়ও গান বাজনায় নিষেধাজ্ঞা দেয় তালেবান সরকার।
গত জুনে আফগানিস্তানের জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা নাজার মুহাম্মদ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। নাজারের পরিবার অভিযোগ করে, তাকে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের সদস্যরা হত্যা করেছে। কিন্তু এ নিয়ে মুখ খোলেনি গোষ্ঠীটি।
পাকিস্তানে পালিয়ে আসাদের মধ্যে এক আফগান সংগীত শিল্পী খান (ছদ্মনাম)। ২০ বছর ধরে রাজধানী কাবুলে বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাইতেন তিনি। তার সুনামও রয়েছে বেশ। তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর তার সব বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলে। তাকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ চালায়। প্রাণ ভয়ে পরিবার নিয়ে কোনও রকম পাকিস্তানে প্রবেশ করেন তিনি।
হাসান নামের আরেক আফগান শিল্পী পালিয়ে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি একসময় আফগান সেনাবাহিনীর জন্য গান গাইতেন। ঠিক কতজন শিল্পী দেশ ছেড়েছেন তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
আফগানিস্তানে গত দুই দশক ধরে পশ্চিমা-সমর্থিত সরকার ব্যবস্থায় রাজধানী কাবুল ও অন্যান্য নগরীতে গড়ে উঠেছিল সংস্কৃতি। কিন্তু ক্ষমতার পালা বদলে এখন অনেক কিছুই বদলে গেছে।
তালেবান অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করার পরই জানিয়েছে, শরিয়াহ আইন অনুযায়ীই দেশ পরিচালনা করা হবে। এরপর থেকে অনেক আফগান শিল্পী হয়তো পালিয়েছেন না হয় আফগানিস্তানেই আত্মগোপনে আছেন।